পর্যটকশূন্য কাশ্মীর
অশান্তির ছায়া সরলেও পর্যটন ব্যবসা অন্ধকারেই
ত কয়েক দিনের লাগাতার বিক্ষোভ প্রতিবাদ এবং কার্ফুর জেরে ব্যবসা বাণিজ্যের বেশ ক্ষতি হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। ফের বিপর্যয়ের মুখে পর্যটন শিল্পও। চলতি মাসের ৯ ফেব্রুয়ারি তিহাড় জেলে ফাঁসি হয় কাশ্মীরের ভূমিপুত্র আফজল গুরুর। তার পর থেকেই ফের অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি হয় রাজ্য জুড়ে।
শীত পরবর্তী এই সময়ে আরও বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে ভূস্বর্গ। হরেক পসরা সাজিয়ে প্রকৃতি স্বাগত জানায় ভ্রমণপ্রেমীদের। তাই এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় উপত্যকায়। আর সে দিকে তাকিয়েই প্রতীক্ষা করে থাকেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ২০০৮, ২০০৯, ২০১০ সালে অশান্তির জেরে পর্যটন ব্যবসার বেশ ক্ষতি হয়েছিল। এর পরের দুটো বছর মোটামুটি শান্তি বহাল ছিল কাশ্মীরে। শান্তির হাত ধরেই সমৃদ্ধি আসছিল পর্যটন শিল্পে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল উপত্যকার অর্থনীতি। এ বছরও তেমনই শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৯ তারিখের পর সব পাল্টে গিয়েছে।
“মার্চ পর্যন্ত সমস্ত বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে,” বললেন কাশ্মীরের ‘ট্র্যাভেল এজেন্ট’ সংগঠনের সভাপতি আবদুল খলিফ ওয়াংনু। তিনি আরও বলেন “এ বার অনেক বেশি পর্যটক আশা করেছিলাম। বর্তমান পরিস্থিতিতে বুঝতে পারছি না, পর্যটকের সংখ্যা আর বাড়বে কি না। অন্য বার এই সময় শ্রীনগরগামী বিমানের আসন ভর্তি থাকে, এ বার সব খালি। মনে হচ্ছে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অনেকেই কাশ্মীরে আসতে চাইছেন না।”
উপত্যকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আফজলের ফাঁসি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি পর্যটক কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ‘কাশ্মীর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুর্যান্ট’-এর সভাপতি শওকত চৌধুরী বললেন, “এখন হোটেলগুলি নাম মাত্র ভর্তি। বাতিল হয়ে গিয়েছে মার্চ পর্যন্ত সব বুকিং।” তবে ‘হোটেলিয়ার্স ক্লাব’-এর সভাপতি মুস্তাক আহমেদ চায়া একটু আশাবাদী। তাঁর বিশ্বাস, ফেব্রুয়ারির শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের পর্যটক সমাগম শুরু হবে।
‘কাশ্মীর ইকনমিক অ্যালায়েন্স’-এর মুখ্য সচিব সিরাজ আহমেদ জানিয়েছেন কেবল পর্যটন শিল্পে নয়, ব্যবসাতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তাঁর দাবি “কার্ফু আর বিক্ষোভের জেরে প্রতিদিন ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়। গুরুর ফাঁসির জেরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কাশ্মীরবাসী। কাশ্মীরের রক্তক্ষরণের বিনিময়ে লোকসভা নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চাইছে কংগ্রেস-ইউপিএ জোট।” প্রশাসন সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের কাশ্মীরে না আসার পরামর্শ দিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। এটিও পর্যটন শিল্পে ভাটা পড়ার অন্যতম একটি কারণ বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। গত বছর কাশ্মীরে আসা নিয়ে নেতিবাচক পরামর্শ দেওয়া বন্ধ করেছিল জাপান, জার্মানি এবং ব্রিটেন। কিন্তু আফজলের ফাঁসির পর, ফের কাশ্মীর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রক।
অশান্তির জেরে বিপর্যস্ত কাশ্মীরের ইন্টারনেট সংযোগও। ফলে বড়সড় ধাক্কার মুখে রাজ্যের নির্মাণকারীরাও। নির্মাকারীদের সমন্বয় সমিতি তরফে খবর, ইন্টারনেট সংযোগের বেহাল দশার জন্য তাঁদেরও ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। যদিও যাতায়াত ও ইন্টারনেট যোগাযোগের হাল ফেরাতে তৎপর হয়েছে রাজ্য। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে উপত্যকা। কিন্তু সে খবর পর্যটকদের কাছে কবে পৌঁছবে তা জানা নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.