|
|
|
|
আমরি-আতঙ্ক আর জি করে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তিনতলায় রোগী ও তাঁদের পরিজনদের ‘আগুন-আগুন’ চিত্কার শুনে ও তাঁদের ছোটাছুটি করতে দেখেই লিফ্ট নিয়ে নেমে আসেন দুই লিফ্টম্যান। এর পরে দুই নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে করে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ফের তিনতলায় ছুটে গিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করেন তাঁরা। পরে হাসপাতালের অন্য কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। দমকল পৌঁছনোর আগেই আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কর্মীদের তত্পরতায় এমন ভাবেই বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে শুক্রবার সকালে আর জি কর হাসপাতাল রক্ষা পেলেও রোগী ও তাঁদের আত্মীয় এবং কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল ‘আমরি-আতঙ্ক’।
এ দিন দুপুরে স্বাস্থ্য ভবনে একটি বৈঠকে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আর জি করে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে।” তবে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেট বন্ধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, “এটা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। এমনই একটি ব্যাপার ঘটেছিল আমরি-তে। এ ধরনের ঘটনাকে ক্রাইম হিসেবে দেখা উচিত।” এর পরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে দাঁড়ানো আধিকারিকদের বলেন, “আমার নির্দেশ, জরুরি পরিস্থিতিকেই প্রাধান্য দিতে হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে কী কী করণীয়, তা আপনারা স্থির করে দিন। নয়তো পরে কিছু হলে দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।”
এ ব্যাপারে আর জি কর হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “বাইরে যে সমস্ত রোগী ছিলেন, তাঁদের ইমার্জেন্সির ভিতরে ঢুকিয়ে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যাতে বাইরের উটকো লোক ঢুকতে না পারে।” তিনি বলেন, “মাস দুয়েক আগেই কর্মীদের আগুন মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেটাই আজ খুব কাজে লাগল।”
পুলিশ ও দমকল সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ আর জি কর হাসপাতালের বি সি রায় ক্যাজুয়ালটি ব্লক বা ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের তিনতলায় সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরির দেওয়ালের একটি ফুটো থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে দেখা যায়। কালো ধোঁয়ায় পুরো বাড়ি ভরে যায়। রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা ভয়ে নীচে নামতে শুরু করেন। আতঙ্কে বেরোতে থাকেন নার্স, চিকিত্সকেরাও। লিফ্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে সিঁড়ি ও র্যাম্পে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাঁদের কথায়, মুহূর্তের মধ্যে হাসপাতালের প্রতিটি তলে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ধোঁয়া বার করতে জানলার কাচ ভাঙা হয়।
দু’টি অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করেছিলেন যে দুই লিফ্টম্যান, তাঁদের এক জন রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “প্রায় তিরিশটি অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আমরা সবাই মিলে আগুন আয়ত্তে আনি।” ধোঁয়ায় রাজা রায় নামে এক লিফ্টম্যান অসুস্থ হয়ে পড়েন। দমকল-কর্তাদের অনুমান, সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরির এসি মেশিন থেকেই আগুন লেগেছিল। রোগীদের থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন নমুনা নষ্ট হয়েছে বলে হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ সূত্রের খবর। হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য-প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্য ও পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “আগুন কী ভাবে লাগল, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।” |
|
|
|
|
|