তৃণমূলের ব্লক সভাপতির মদতে গ্রামবাসীদের একাংশ বিদ্যুৎ দফতরের কাজে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে আঠারখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কদমতলা এলাকায়। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা সেখানে খুঁটি পুঁততে পারেননি বলে অভিযোগ। প্রায় দেড় ঘন্টা গ্রামবাসীদের একাংশের সঙ্গে বচসা হওয়ার পর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ফিরে যান। এলাকার কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রানা নিয়োগীর অভিযোগ, “তৃণমূলের মাটিগাড়া ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষের মদতে বিদ্যুৎ দফতরের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” এলাকার একাংশ বাসিন্দার পাল্টা অভিযোগ, রানাবাবু নিজের সুবিধের জন্য প্রভাব খাঁটিয়ে রাস্তার উপর দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, কদমতলা ডাকঘর এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির উপর দিয়ে বিদ্যুতের ‘হাইটেনশন লাইন’ গিয়েছে। সেগুলি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে মাস তিনেক আগে সেগুলি সরানোর আর্জি জানান রানাবাবু-সহ এলাকার কিছু বাসিন্দা। তার পরেই বিদ্যুৎ দফতরের তরফে সমীক্ষা করে তাঁদের প্রয়োজনীয় টাকা জমা দিতে বলা হয়। রানাবাবুর প্রতিবেশী সুধীন ঘোষ দাবি করেন, ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পরেই তার সরানোর কাজ শুরু করে বিদ্যুৎ দফতর। তিন বার খুঁটি পুততে গিয়ে ফিরতে হয় বিদ্যুৎ কর্মীদের। |
বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির মাটিগাড়ার সহকারি ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র দেব বলেন, “যে অবস্থায় তারগুলি রয়েছে তাতে ঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের কাজ করতেও অসুবিধা হয়। সে জন্য ওই এলাকার গ্রাহকদের আবেদন মেনে তার রাস্তার উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু রাস্তা সরু হওয়ার যাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে কিছু বাসিন্দা কাজ করতে দিচ্ছে না। ফলে আমাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।”
তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎবাবু এদিন দাবি করেন, যে রাস্তার উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে তাতে বাসিন্দারা অসুবিধায় পড়বেন। তিনি বলেন, “ওই ভাবে তার নিয়ে গেলে শুধু রাস্তা সরুই হবে না, গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হবে। সে কথা আমরা বিদ্যুৎ দফতরে জানিয়েছি। তাঁরা অন্য কোনওদিক দিয়ে তার নিয়ে যেতে পারে। সেটা করা হচ্ছে না। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য প্রভাব খাঁটিয়ে ওই কাজ করে নিতে চাইছেন।”
এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় সিংহ, নিয়তি সিংহরা বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে আমরা যাতায়াত করি। হাইটেনশন তার থাকলে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে। তা ছাড়া ওই রাস্তায় খুঁটি বসানো হলে অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলের মতো পরিস্থিতিও থাকবে না।” রানাবাবু অবশ্য দাবি করেন, ওই রাস্তার উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। তার অনেক উপর দিয়ে ১১০০ হাজার ভোল্টের লাইন নিয়ে যাওয়ার কথা। তিনি বলেন, “রাস্তার উপর দিয়ে তার নিয়ে যাওয়া হলে কারও ভয় থাকবে না। এ ছাড়া অন্য বিদ্যুতের খুঁটি যেভাবে রয়েছে সে হিসেবেই দুটি খুঁটি বসবে। আসলে আমি কংগ্রেস করি বলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” বিষয়টি দু’পক্ষের তরফেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |