হায়দরাবাদে বিস্ফোরণের পর এ রাজ্যেও জঙ্গি হানার আশঙ্কায় সীমান্তগুলিতে বাড়ানো হল নজরদারি। রাজ্যের প্রধান দু’টি স্থলবন্দর উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পেট্রাপোল এবং বসিরহাটের ঘোজাডাঙায় কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে কেউ যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য বসিরহাট ও বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন সীমান্তেও যৌথভাবে কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ এবং বিএসএফ। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও বাড়ানো হয়েছে টহলদারি। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে গ্রেফতার হওয়া ধরা পড়া জঙ্গিদের জেরা করে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের ঘোজাডাঙার উত্তর ও দক্ষিণপাড়া, পানিতর, শাঁকচুড়ো, সোলাদানা, কাটাখাল, সাহেবখাল, সামসেরনগর-সহ সুন্দরবন অঞ্চল এবং বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত ছাড়াও গাঙ্গুলিয়া, বয়রা, ঝাউডাঙা, পাঁচপোতা, আমডোব, কালিয়ানী অঞ্চলকে করিডোর হিসাবে ব্যবহার করে এপারে অনুপ্রবেশ করে ওপারের লোকজন। তারপর কলকাতায় কিছু দিন থাকার পর ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে সামসেরনগর নদী ও ডাঙা এলাকা মিলিয়ে ২২১ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা। নদীপথে ১৫৫ কিলোমিটার এবং বাকিটা স্থলভূমির মধ্যে পড়ে। এর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া আছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোথাও কাঁটাতারের অস্তিত্বই নেই। একই অবস্থা বনগাঁর সীমান্তেও। ৯৪ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার কাঁটাতার নেই। ফলে সাধারণ এলাকা ছাড়াও ওই সমস্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। |
বসিরহাট সীমান্ত এলাকায় ৩৫টি বর্ডার আউটপোস্ট ও ৬ টি থানা রয়েছে। বনগাঁয় রয়েছে ১৫টি বর্ডার আউটপোস্ট ও ৩ টি থানা। এই সমস্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়েও তল্লাশি করা হচ্ছে। কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ঘোজাডাঙা ও পেট্রাপোল সীমান্তে। প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাক, গাড়ি থামিয়ে চলছে তল্লাশি। তল্লাশি করা হচ্ছে বাসস্ট্যাণ্ড, হোটেলগুলিতেও। বসিরহাটের সীমান্তবর্তী নদীগুলিতে নৌকা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “সীমান্তে নজরদারির বিএসেফ এবং পুলিশের পাশাপাশি বিডিওদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।” বনগাঁর এসডিপিও রুপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, “হায়দরাবাদের ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ ও বিএসএফকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।” |