|
|
|
|
|
|
ক্যালাইডোস্কোপ |
নানা রং নানা নকশা |
বিভূতিসুন্দর ভট্টাচার্য |
এক নকশা ফিরে আসে না। ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে চোখের সামনে ফুটে উঠবে লাল-নীল-সবুজের নকশার মেলা। এই বিস্ময়, যার নাম ক্যালাইডোস্কোপ, নাকি হারিয়ে যাচ্ছে।
ক্যালাইডোস্কোপের রঙিন নকশার মতই উজ্জ্বল বাঙালির টুকরো স্মৃতির ক্যালাইডোস্কোপ। স্মৃতির মণিকোঠা থেকে হয়তো আজও উঁকি দেয় উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সেই ভ্রমণকাহিনির নানা স্মৃতি। তবে সত্যি কি ক্যালাইডোস্কোপ অমিল? হারিয়ে যাওয়া নানা জিনিসের প্রবীণ সংগ্রাহক উত্তর কলকাতার শ্যামচাঁদ মিত্র স্ট্রিটের সুশীলকুমার চট্টোপাধ্যায় বললেন, “প্রায় দশ বছর হল কোথাও ক্যালাইডোস্কোপ বিক্রি হতে দেখিনি। আগে শহরের নানা মেলায় এই খেলনাটির দেখা মিলত। তবে বহু দিন ধরে খুঁজেও ক্যালাইডোস্কোপ পাইনি।”
সম্প্রতি একটি মেলায় হঠাৎই দেখা মিলল ঝোলা-ভর্তি ক্যালাইডোস্কোপ নিয়ে রামেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের। হুগলির শিয়াখালার দেশমুখা গ্রামে তিনি আজও তৈরি করেন ক্যালাইডোস্কোপ। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যে বাবার পেশাটাই বেছে নিয়ে ছিলেন রামেশ্বর। বললেন, “এক সময় হারিয়ে যাচ্ছিল এই শিল্প। যাঁরা আগে এ পেশায় ছিলেন প্রায় সকলেই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় পেশা বদলেছেন। তবে আমার জেদ ছিল শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখার। আজও চেষ্টা করে চলেছি নতুনত্ব আনার। কাচের পাশাপাশি এখন ব্যবহার হয় ফাইবার। |
|
আগে দু’তিন রঙের কাচ ব্যবহার হত, এখন থাকে চোদ্দো রকম।” ক্যালাইডোস্কোপ তৈরি করতে লাগে কাচ, চুড়ি, কাগজ, দড়ি, ফাইবারের টুকরো এবং আয়না।
রামেশ্বরের তৈরি ক্যালাইডোস্কোপ পাড়ি দেয় গোয়া, দিল্লি, মুম্বই, আগ্রা, শিলিগুড়ি, শান্তিনিকেতন প্রভৃতি স্থানে। আজও দেশের উল্লেখযোগ্য মেলাগুলিতে ক্যালাইডোস্কোপের সম্ভার নিয়ে পৌঁছে যান রামেশ্বর। চাহিদা কতটা? রামেশ্বর জানালেন, ভালই। মেলায় ভালই বিক্রি হয়। কোনও দোকানে মেলে না বলে সারা বছরই চাহিদা থাকেই।
মেলাতেই ক্যালাইডোস্কোপ কিনতে ব্যস্ত রথীন্দ্রনাথ চৌধুরী বললেন, “নাতির বায়না ছিল একটা ক্যালাইডোস্কোপ। নিউমার্কেট থেকে অভিজাত মলের বিভিন্ন খেলনার দোকান কোথাও বাদ রাখিনি। কোথাও পাইনি ক্যালাইডোস্কোপ। তবে মনে মনে একটা ইচ্ছে ছিল। পাওয়া গেলে নাতির জন্য তো বটেই নিজের জন্যেও একটা ক্যালাইডোস্কোপ সংগ্রহ করে রাখবো। আজ হঠাৎই পেয়ে গেলাম সেই জিনিস।”
|
|
|
|
|
|