‘গেম অব গ্লোরিয়াস আনসার্টেন্টিজ’।
আদ্যপান্ত পাল্টে গেলেও এই তকমা ক্রিকেট খেলাটার সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে রয়েছে আজও। এই জেট গতির ক্রিকেটের যুগেও।
গত দু’দিন ধরে চলা ঘটনার ঘনঘটা এর আদর্শ উদাহরণ হতেই পারে। ৯৫-এ অল আউট তারা, যারা আগের দিনই ঝাড়খন্ডকে ১১৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল। মানে অসম। তাদের এই বেহাল অবস্থা করল কারা? বাংলা, যারা আগের দিনই ত্রিপুরার কাছে তুমুল অপদস্থ হয়েছে ১২১ রানে গুটিয়ে গিয়ে।
এ তো গেল ইডেনের গল্প। |
কয়েক কিলোমিটার দূরেই সল্টলেকে আবার আর এক কাণ্ড। চব্বিশ ঘন্টা আগে যে ২২ গজে বাংলার ব্যাটিং প্রায় নগ্ন হয়ে গিয়েছিল, সেই জমিতেই ওড়িশা দাঁড় করাল ৩৫৩ রানের পাহাড়। কেন এমন অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা? না, কোনও ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ এর ব্যাখ্যা দেওয়ার রাস্তায় হাঁটতে চাইলেন না। লক্ষ্মী, মনোজদের কাছেও এর কোনও জবাব নেই। সারা মরশুমে কোনও পাকা ওপেনিং জুটি খুঁজে পেলেন না কেন, এর জবাবই জানেন না তাঁরা। আগের প্রশ্নটা তো আরও কঠিন।
দিনের শেষে মোদ্দা খবর হল, গত বারের চ্যাম্পিয়ন বাংলা বিজয় হাজারে ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনাল খেলছে। কিন্তু পরপর তিন ম্যাচে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে জিতেও সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া হল না অসমের। তাদের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি পেরিয়ে তবেই শেষ আটের লড়াইয়ে ঢুকতে হবে। সে-ও আর এক জটিল এবং অদ্ভুত নিয়ম। গত বারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলা প্রায় লাফিয়ে উঠে পড়ল শেষ আটে। চ্যাম্পিয়নের ট্রফিটাই হয়ে উঠল লক্ষ্মীদের সিঁড়ি। শর্তটা এ রকম, এ বার পূর্বাঞ্চলীয় রাউন্ড রবিনে প্রথম দুইয়ে থাকলেই হবে।
শুধু বাংলা নয়, এই টুর্নামেন্টের অদ্ভুত নিয়মে গত বারের চার সেমিফাইনালিস্টই সরাসরি এ বারের শেষ আটে। এ যেন গত জন্মের পূণ্যের ফল ভোগ করা। সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম। আঞ্চলিক লিগে প্রথম দুইয়ে থাকতে পারলেই তাদের এক নম্বর দল হিসেবেই কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে দেওয়া হবে। যে নিয়মে উঠে পড়ল দিল্লি, পঞ্জাব ও মুম্বইও।
বাংলাকে আগামী বৃহস্পতিবার বিশাখাপত্তনমে খেলতে হবে উত্তরপ্রদেশ বনাম কর্নাটক প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের জয়ীর সঙ্গে।
কিন্তু শুক্রবারও ৯৬-এর টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে বাংলার টপ অর্ডার যে রকম হিমশিম খেল, ২৬ রানের মধ্যেই যে ভাবে ফিরে গেলেন প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান (৭), বিবেক সিংহ (৯) ও শুভময় (১২)। তাতে বিশাখাপত্তনমেও বাংলা দলে যে ‘রেড অ্যলার্ট’ জারি থাকবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শেষ পর্যন্ত মনোজ তিওয়ারির ৬২ বলে অপরাজিত ৬১-র ইনিংসই (আটটি চার ও দু’টি ছয়-সহ) বাংলাকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিল। অসমকে ৯৫-এ গুটিয়ে দেওয়ার প্রধান স্থপতি বীর প্রতাপ সিংহ। একাই চার শিকার তাঁর। দু’টি লক্ষ্মীর। ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য উইকেট ও আবহাওয়াকেই দায়ী করছেন অসম ক্যাপ্টেন আবু নাচিম। সে করুন। কিন্তু ব্যাটিংয়ের এই হাল নিয়ে নক আউটে কী ভাবে বৈতরণী পেরোবেন, তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন মনোজ, লক্ষ্মী দুজনেই।
সে জন্যই ‘রেড অ্যালার্ট’! |
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অসম ৯৫ (বীর প্রতাপ ৪-৩১, লক্ষ্মী ২-১৩)
বাংলা ৯৮-৩ (মনোজ ৬১ নঃআঃ) |