চার দিনের শুনানি শেষে অবশেষে স্বস্তি। জামিন পেলেন অস্কার পিস্টোরিয়াস।
প্রিটোরিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটস্ কোর্টের রুম ‘সি’-তে গত চার দিন ধরে দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি ডেসমন্ড নায়ার শুক্রবার এই সিদ্ধান্ত জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই অস্কারের পরিবারের সদস্যরা ‘ইয়েস’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। যেন এই মুহূর্তটার অপেক্ষাতেই ছিলেন তাঁরা। তবে কলঙ্কিত প্রতিবন্ধী অ্যাথলিটকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশ ছেড়ে যাবেন না। মামলার সাক্ষীদেরও প্রভাবিত করবেন না, এমনও কথা দিতে হয় অস্কারকে। দশ লক্ষ র্যান্ডের (প্রায় এক লক্ষ ১২ হাজার ডলার) বিনিময়ে জামিন পেলেন অস্কার। সিদ্ধান্তটা শুনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। বিচারপতি যখন বলেন, “আমার ধারণা, শেষ মুহূর্তে অস্কারের কোলেই শুয়ে ছিলেন রিভা”, তখন চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অভিযুক্ত অলিম্পিয়ান অস্কার। |
তবে জামিন মঞ্জুর করা মানেই যে ব্লেড রানার-কে বেকসুর ঘোষণা করা নয়, তা মনে করিয়ে দিয়েই বিচারপতি জানান, “তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তকে পুলিসি হেফাজতে রাখার প্রয়োজন আছে কি না, জামিনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মূলত এই বিষয়টিই দেখা হয়েছে।” অস্কারের বিরুদ্ধে তাঁর বান্ধবী রিভা স্টিনক্যাম্পকে হত্যার অভিযোগ তুলেছিলেন এই মামলার মূল তদন্তকারী অফিসার হিল্টন বোথা, যাঁকে গতকালই এই তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেওয়ার জন্য। তিনি উলটোটা প্রমাণ করতে চাইলেও অস্কারের আত্মীয়পরিজন ও বন্ধুবান্ধবরা কিন্তু আদালতকে জানিয়েছেন, রিভার সঙ্গে অস্কারের মধুর সম্পর্ক ছিল।
সরকার পক্ষের আইনজীবী মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অস্কারকে জামিন মঞ্জুর করার পক্ষে ছিলেন না। তাঁর যুক্তি ছিল, জামিন পেলে তারকা অ্যাথলিট অন্য দেশে চলে গিয়ে সেখানকার আশ্রয় পেতে পারেন। তখন তাঁকে এ দেশে ফিরিয়ে আনা মুশকিল হবে। কিন্তু বিচারপতি তা মেনে নেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার আইনে পূর্বপরিকল্পিত হত্যা সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধ এবং এর জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। অস্কারের বিরুদ্ধে সেই পূর্বপরিকল্পিত হত্যারই অভিযোগ উঠেছে। তবে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে বিষয়টির আরও গভীরে গিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন পিস্টোরিয়াস-মামলার ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিচারপতি নায়ার। |