অধিকাংশ গ্রামের। বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। এমনই এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে সম্প্রতি বন্ধনী ব্যায়াম সমিতির মাঠে এক মাস কবাডির প্রশিক্ষণ নিল। যৌথ ভাবে এই
আবাসিক শিবিরের আয়োজন করেছিল হাওড়া জেলা কবাডি অ্যাসোসিয়েশন ও জেলা যুব অধিকরণ দফতর।
গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রতিভা খুঁজে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার যোগ্য করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বাংলা জুড়ে ‘প্রতিভার সন্ধানে’ নামের কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্যে যুবকল্যাণ দফতর। এর মধ্যে ১৯টি জেলাকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করে কবাডি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের পরে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চারটি অঞ্চল থেকে ১৫ জন ছেলে ও ১৫ জন মেয়েকে বেছে নেওয়া হয়। এই ৩০ জনকে সাইতে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে থাকা, খাওয়া, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হবে। |
দীপঙ্কর মণ্ডল, বৈশাখী মান্না, সুদেষ্ণা দাসরা এই শিবিরে অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। শিবির শেষে ওরা তিন জনই নিজেদের বিভাগে সেরা শিক্ষার্থীর পুরস্কার পেল। দেউলটির ছেলে দীপঙ্কর এ বছর মাধ্যমিক দেবে। বাবা ট্রেনে হকারি করেন। তাঁর কথায়: “এখানে অনেক কিছু শিখলাম। বড় হয়ে জাতীয় দলে খেলতে চাই।” দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুদেষ্ণা দাসের বাবা কাঠের গোলায় কাজ করেন। হালদারপাড়ার এই মেয়েটি বলল,
“প্রশিক্ষণ নিতে এসে সেরা হব ভাবিনি। খুব ভাল লাগছে।”
জেলা কবাডি সংস্থার সচিব স্বপন কুমার পাঁজা বলেন, “প্রাথমিক পর্বে জেলার বিভিন্ন স্কুল এবং যে সব ক্লাবে কবাডি চর্চা হয় সেই সমস্ত জায়গায় সার্কুলার পাঠানো হয়। ২০০ জন ছেলেমেয়ের মধ্যে ৬০ জনকে বেছে নিয়ে শুরু হয় জেলা পর্যায়ের আবাসিক শিবির। শিবির শেষে ৩০ জনকে বেছে নেওয়া হয়।”
শিবিরে এসে খেলাটাকে আরও ভাল ভাবে শেখার সুযোগ পেয়েছে ছোটরা। উলুবেড়িয়ার কৈজুরী হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নীলরতন চৌধুরী, সাঁতরাগাছি ভানুমতী গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির দুই পড়ুয়া মোনালিসা মালিক, পারমিতা খাসকেলরা এই শিবিরের শেষে কবাডি নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। |
ছোটদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন কমল মিত্র, প্রতিমা হাজরা, বিজলি মাজির মতো ছ’জন কোচ। কমলবাবুর কথায়: “অধিকাংশ শিক্ষার্থীই গ্রাম থেকে এসেছিল। নিয়মশৃঙ্খলা, ফিটনেস থেকে শুরু করে কবাডির সব বিষয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।” কোচ বিজলি দেবী বললেন, “রেডিংস, ক্যাচিং, ওঠানামা করা, দম ধরে রাখার মতো নানা দিক শেখানো হয়েছে। বেশ কয়েক জন নজর কেড়েছে।”
জেলা কবাডির কার্যকরী সভাপতি নিমাই দত্তর কথায়: “বাংলার কবাডি পিছিয়ে পড়েছে। এই ধরনের উদ্যোগ অনেক ভাল খেলোয়াড়ের জন্ম দেবে।” শিবির শেষের অনুষ্ঠানে কৃষিবিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদার, কাউন্সিলর তন্দ্রা বসু, জেলা কবাডি সংস্থার চেয়ারম্যান অবনীভূষণ ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
|