বন্দর এলাকায় ভারসাম্য রক্ষার রাজনীতিতে ক্রমশ জমি ‘শক্ত’ করার চেষ্টা করছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের প্রেক্ষিতে কিছুটা ‘চাপে’ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। এই পরিস্থিতিতে ওই ঘটনায় জড়িত ববির ঘনিষ্ঠ ১৫ নম্বর বরোর তৃণমূল চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবালের (মুন্না) জায়গায় আপাতত নিজের ঘনিষ্ঠ সামসুজ্জামান আনসারিকে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়ে এসেছেন মেয়র। ইকবাল এখন গ্রেফতার এড়াতে ‘ফেরার’।
বরো চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে বরোর বিভিন্ন কাজকর্ম চালাতে সমস্যা হচ্ছিল। এলাকা থেকেই এমন অভিযোগ আসতে শুরু করেছিল পুরভবনে। ওই সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে মেয়র শুক্রবার বলেন, “সামসুজ্জামান তো আছেন। আপাতত তিনিই বরো-টা দেখবেন।” ববি কিন্তু মনে করেন, “বরোর এগ্জিকিউটিভ অফিসাররাই বরো চালান। চেয়ারম্যান না-থাকায় সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” |
তবে, বাম কাউন্সিলরেরা এই অস্থায়ী ব্যবস্থায় খুশি নন। তাঁরা চান, খুনের মামলার অভিযুক্ত মুন্নাকে অপসারণ করতে হবে। কংগ্রেস কাউন্সিলরেরাও চেয়ারম্যানের পদ থেকে মুন্নার অপসারণ চেয়েছেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রূপা বাগচী এ দিন বলেন, “ওই বরোর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার পরেও তাঁকে ওই পদ থেকে কেন সরানো হচ্ছে না?” বাম কাউন্সিলরেরা এ দিন পুর-কমিশনারের ঘরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান।
খুনের মামলায় অভিযুক্ত মুন্নাকে কেন সরানো হচ্ছে না বরো চেয়ারম্যানের পদ থেকে? মেয়রের যুক্তি, “বরো চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রতিনিধি। নিজে থেকে পদত্যাগ না করলে তাঁকে সরানো যায় না। আমাদের এ নিয়ে কিছু করার নেই।” পুরসভা সূত্রের খবর, কোনও মামলায় কারও বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলে তবেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অপসারণের সুযোগ থাকে। অন্যথায় বরোর অন্য কাউন্সিলরেরা বৈঠকে বসে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। কিন্তু বন্দর এলাকায় তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ যে সমীকরণ রয়েছে, তাতে ইকবালের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে কোনও লাভ রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে মেয়র ঘনিষ্ঠদের। তাই আপাতত সামসুজ্জামান আনসারিকে মাথায় রেখে এই অস্থায়ী ব্যবস্থা।
গার্ডেনরিচ কাণ্ডে এ দিন ধৃত চুড়ি ফিরোজ, শাকিল ও রাজ-কে শুক্রবার ফের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে আলিপুর আদালত। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান স্টেশন থেকে সিআইডি তাদের গ্রেফতার করে। ধৃত তিন জনকে এ দিন মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক সুরথেশ্বর মণ্ডলের আদালতে পেশ করা হয়। সিআইডি আদালতে জানায়, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন ধৃতদের কাছ থেকে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আগামী ২৫ তারিখ ফের তাদের আদালতে পেশ করা হবে। |