হৃদরোগে মৃত্যু হল আসানসোলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান গৌতম রায়চৌধুরীর (৬১)। শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ শহরের একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ দিন আসানসোল পুরসভায় ছুটি ঘোষণা করে দেন মেয়র। আসানসোল সিপিএম পার্টি অফিস ও পুরভবনে মরদেহ নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই নার্সিংহোমে গৌতমবাবুর পিত্তথলিতে অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। সেখানকার শল্য চিকিৎসক তথা আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রতিভারঞ্জন মুখোপাধ্যায় জানান, অস্ত্রোপচারের আগে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়ে গৌতমবাবু অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। চিকিৎসা শুরু হওয়ার পরেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে নার্সিংহোমে জড়ো হন শহরের বহু বাসিন্দা। উপস্থিত হন আসানসোলের ডেপুটি মেয়র কংগ্রেসের অমর চট্টোপাধ্যায়, মেয়র তৃণমূলের তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী, পুরসভার বিরোধী দলনেতা তাপস রায়, কংগ্রেস নেতা রবিউল ইসলাম, পুরসভার চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
দোমহানির শ্মশানঘাটে যান সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, ডিওয়াইএফের রাজ্য সভাপতি আভাস রায়চৌধুরী প্রমুখ। সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় একটি বিবৃতিতে গৌতমবাবুকে ‘নব আসানসোলের রূপকার’ বলে মন্তব্য করেন।
আসানসোল বিসি কলেজের ছাত্র ছিলেন গৌতমবাবু। ছাত্রাবস্থা থেকেই বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। শিল্পাঞ্চলে এক সময়ে এসএফআইয়ের সংগঠন গড়ে তোলায় বড় ভূমিকা নেন। প্রথমে বিএসসি, তার পরে বিএ এবং আইনে স্নাতক হন। কর্মজীবন শুরু করেন ইস্কো কারখানায়। পরে চাকরি ছেড়ে সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী হন। ১৯৮১ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯১-এ তিনি আসানসোল বিধানসভা আসন থেকে জয়ী হন। তার পরে দু’বার ভোটে দাঁড়িয়েও পরাজিত হন। ১৯৮৭ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক ছিলেন তিনি। বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ২০০৯ সালে আর দলের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করেননি। তবে কলকতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছিলেন। রেখে গেলেন স্ত্রী ও এক মেয়েকে। |