পান বা গুটখা মুখে দিয়ে হাসপাতালে ঢোকা নিষিদ্ধ হলেও কেউ তা মানেন না। হাসপাতালের করিডরের দেওয়ালও তাই ভরে উঠেছে পানের পিকে। তা রুখতে পান, গুটখা মুখে হাসপাতালে ঘুরলে বা সঙ্গে নিয়ে ওয়ার্ডে ঢুকলে জরিমানা চালু করার নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। বৃহস্পতিবার আচমকা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেওয়াল পানের পিকে নোংরা হয়ে উঠেছে দেখে কর্তৃপক্ষকে জরিমানা চালু করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। জেলাশাসক বলেন, “হাসপাতালে পান, গুটখা খাওয়া, পিক ফেলা নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও অনেকেই মানছেন না। কড়া ব্যবস্থা নিতেই জরিমানা চালু করা হবে। তাতে ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। বারবার একই অপরাধ করলে জরিমানা বেশি হবে।” তিনি জানান, রোগীর আত্মীয় পরিজনরা হাসপাতালে ঢোকার সময় সঙ্গে পান, গুটখা রয়েছে কি না তল্লাশি করে, এ ব্যাপারে সাবধান করে দিতে হবে।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ি হাসপাতাল যান তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদার, উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ অশোক বিশ্বাস, সহকারি সুপার-সহ অন্যরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন তিনি। একই শয্যায় দুই জন প্রসূতি রয়েছে দেখে তাঁদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে বললেন। রোগিণী রীতা দাসকে হাসপাতাল থেকে খাবার দেওয়া হচ্ছে না দেখে নার্সদের ডেকে কারণ জানতে চান। রীতাদেবী-সহ রোগীদের অনেকে হাসপাতালের তরফে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিষয়গুলি কেন জানানো হচ্ছে না সে ব্যাপারে নার্সদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। শৌচাগার পরিষ্কার কি না তা দেখতে নিজেই সেখানে ঢুকে পড়েন। পরিষেবার কোথাও খামতি নজরে পড়লেই তা মেটাতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
হাসপাতালের করিডরে রাখা বেশ কিছু অগ্নি নির্বাপক মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে দেখে দ্রুত সেগুলি ‘রিফিলিং’ করাতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিদেন। তা ছাড়া অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা যে পর্যাপ্ত নেই সেই কথাও জানান। কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁকে জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলাশসাক, “স্বল্প মূল্যে ওষুধ পেতে হাসপাতাল চত্বরে যে জনওষধি কেন্দ্র খোলা হয়েছে সেখানে সমস্ত ওষুধের সরবরাহ ঠিক মতো নেই। পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ রাখতে বলেছি।”
এর পর প্রসূতি বিভাগ, পুরুষ এবং মহিলাদের শল্য বিভাগ-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। ‘সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট’-এর কাজকর্ম নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। করিডর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শয্যায় পাতার গদি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তা সরিয়ে দিতে অথবা সেটি ব্যবহার যোগ্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। করিডরের দেওয়ালে পানের পিক ফেলা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি জানান, মুখে পান, গুটখা নিয়ে কেউ হাসপাতালে ঢুকলে জরিমানা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন। |