গ্রামবাসীদের পারাপারের সুবিধা করতে জোড়বাঁধের উপর কজওয়ে ভেঙে সেতু, চেকড্যাম গড়তে গিয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতি। চেকড্যাম গড়ার কাজ শেষ হলেও উদ্বোধনের আগেই তা বানের জলে ভেসে যায়। আর কজওয়েটিও ভেঙে ফেলায় গ্রামবাসীদের পারাপারের পথটুকুও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় সেতু গড়ে দেওয়ার দাবিতে একাধিকবার জেলা প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি, বিধায়কের দ্বারস্থ হয়েছেন বাসিন্দারা। অথচ কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সমস্যাটি মেজিয়ার কেন্দুট গ্রামের।
মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে কেন্দুট-জুজঘাটি জোড়বাঁধের উপরে কজওয়ে ভেঙে চেকড্যাম গড়ার কাজ শুরু করে মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতি। প্রায় ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয় এই প্রকল্পে। ২০০৭ সালে সেই কাজ প্রায় শেষ করে উদ্বোধনের তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধল বিধি। উদ্বোধনের আগেই বানের জলে ভেসে গেল সেতুর দু’দিকের অংশ। এই ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পরেও নতুন করে সেতু গড়ার কাজ শুরু হয়নি। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ সারতে জোড়বাঁধের জল ঠেলে মেজিয়া যেতে হয় কেন্দুট, রায়ডিহি, সীতারামপুর, বেলবরিয়া, নাটশালা-সহ আরও বেশ কিছু গ্রামের মানুষদের। |
কেন্দুট গ্রামের বাসিন্দা উজ্বল মণ্ডল, জীতেন মণ্ডলদের ক্ষোভ, “ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে থানা, ব্লক অফিস, স্কুল-কলেজ যেতে গেলে আমাদের মেজিয়া যেতে হয়। কিন্তু জোড় বাঁধের সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে আমাদের।” তাঁদের কথায়, “আগে আমরা কজওয়ে দিয়েই এই জোড়বাঁধ পার হতাম। বর্ষায় মাস দু’য়েক অসুবিধা হলেও বছরের অন্য সময় অসুবিধা হত না। কিন্তু এখন জোড়বাঁধের জলে নেমেই সারা বছর পার হতে হয়।”
কেন্দুটে গোলদারি দোকান রয়েছে সন্দীপ মণ্ডলের। মেজিয়া থেকেই মালপত্র কিনে দোকানে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর কথায়, “সেতু না থাকায় জোড়বাঁধের এক পাড়ে গাড়ি থামিয়ে হেঁটে হাতে করে মালপত্র বয়ে অন্য পাড়ে যেতে হয়।” তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই জোড়বাঁধে সেতু গড়ে দেওয়া হোক।”
এ দিকে, এই ভাঙা সেতুকে ভর করেই বছর বছর নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই এই সেতুকে সামনে রেখে প্রচারে নেমেছিল তৃণমূল। যার জেরে দীর্ঘ কাল ধরে বামেদের দখলে থাকা কুস্তোড় গ্রাম পঞ্চায়েত চলে আসে তৃণমূলের দখলে। কিন্তু সেতুর ছবি বদলায়নি।
গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ‘ভোটে জিতলে এই সেতু বানানোই হবে প্রথম কাজ’ বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী স্বপন বাউরি। অথচ ভোটে জেতার পরে সেতুর দিকে ফিরেও তাকাননি স্বপনবাবু। তাই সেতু যেমন ভাঙা অবস্থায় ছিল তেমনই আছে। তবে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগেই সেতু মেরামতির কাজ শুরু করতে তৎপর হয়েছে সিপিএমের দখলে থাকা মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতি। এমনটাই দাবি করছেন ওই পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি শেখ ইলিয়াস। তিনি বলেন, “চেকড্যাম-সহ এই সেতুটি গড়তে আনুমানিক ১ কোটি টাকার মতো খরচ হবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলেছি।” তাঁর আশ্বাস, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এই কাজ আমরা শুরু করব। |