|
|
|
|
তৃণমূলের মাতব্বরি, ইস্তফা সিপিএম প্রধান-উপপ্রধানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের চাপে কাজ করতে না পারায় একযোগে পদত্যাগ করলেন সিপিএমের প্রধান ও উপ-প্রধান। ঘাটাল ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী ও উপপ্রধান রাজকুমার দাস ইতিমধ্যেই বিডিওকে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন।
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, “আমার মতামতকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূল নিজেদের মতো করে পঞ্চায়েত চালানোর চেষ্টা করছে। আমি বহুবার মৌখিক ভাবে বিডিও অফিসের বৈঠকে এই সব কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। ফলে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” উপপ্রধান রাজকুমারবাবুরও একই বক্তব্য। দু’জনেই বলেন, “আমরা যে সংসদ থেকে জয়ী হয়েছি, সেখানে উন্নয়নের কাজেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তা হলে পদে থেকে লাভ কী?” অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ মাঝি। তাঁর বক্তব্য, “সব অভিযোগ মিথ্যা। ওঁরা ভয়ে পদত্যাগ করেছেন।” বিডিও দেবব্রত রায় বলেন, “সুলতানপুর পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপ-প্রধান দু’জনই পদত্যাগ করায় একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ বিভিন্ন কাজে এসে ফিরে যাচ্ছেন। ঠিকাদারদের টাকা দেওয়াও বন্ধ রয়েছে। অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা চলছে।”
বিধানসভায় পালাবদল হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে খাতায়কলমে এখনও ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। তবে এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব বাড়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণেই পরিচালিত হচ্ছে পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “জেলার বেশিরভাগ পঞ্চায়েতেই এই এক চিত্র। উন্নয়নেও এর প্রভাব পড়ছে।” নিয়মানুযায়ী পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এক বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই মতো ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন, রাজ্য অর্থ কমিশন-সহ বিভিন্ন খাতের টাকায় বছরভর কাজ চলে। বিআরজিএফ(ব্যাক ওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ড)-এর ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের হিসেবে কাজ হয়। নতুন রাস্তা তৈরি, সংস্কার, স্কুল সংস্কার, পুকুরের মাটি কাটা, বাঁধ নির্মাণ, বাঁশের সাঁকো তৈরি, নলকূপ বসানো-সহ উন্নয়নের নানাবিধ কাজ করেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। রাজনৈতিক জটিলতার ফলে জেলা জুড়েই সেই কাজে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল সুলতানপুর পঞ্চায়েতে। বিধানসভায় জয়ের পরই এই পঞ্চায়েতের কর্তৃত্ব নিয়ে নেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। প্রধান কখন অফিসে আসবেন এবং কতক্ষণ থাকবেন তাও তাঁরাই ঠিক করে দিতেন বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে উন্নয়নের নানা কাজেও দুর্নীতি করতে তৃণমূল নেতারা চাপ দিচ্ছিলেন। এ ক্ষেত্রে একশো দিনের কাজে ভুয়ো মাস্টার রোল তৈরি-সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের পদত্যাগী প্রধান। তৃণমূলের মাতব্বরিতে কুরান গ্রামে সাংসদ তহবিলের টাকায় প্রানীয় জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কারণ, ওখানে কাজে সায় নেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূলের তরফে এ সবই মিথ্য অভিযোগ বলে দাবি করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|