সম্পাদকীয় ২...
সংসদ চলুক
ংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হইয়াছে। এই অধিবেশনে রেলওয়ে ও সাধারণ বাজেট পেশ হওয়া ছাড়াও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ ও পাশ হওয়ার কথা। যেমন লোকপাল বিল, খাদ্য সুরক্ষা বিল, নারী-নির্যাতন তথা ধর্ষণবিরোধী বিলও। কিন্তু সে জন্য সংসদের অধিবেশন মসৃণ ভাবে চলা দরকার। বিগত কয়েকটি সংসদ অধিবেশনের অভিজ্ঞতা বলিতেছে, বিরোধীদের নিরবচ্ছিন্ন বাধা দানের ফলে কার্যত ওই সকল অধিবেশন বানচাল হইয়া গিয়াছে, কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিলই পেশ করা যায় নাই, পেশ হইলেও তাহা লইয়া বিশদ আলোচনা হইতে পারে নাই। এ বারেও তেমন আশঙ্কা বিলক্ষণ ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের একটি মন্তব্য, যাহাতে তিনি ‘হিন্দু সন্ত্রাস’-এর কথা বলেন এবং সে জন্য বিরোধী দল বিজেপিকে দায়ী করেন। স্বভাবতই এই মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা না-করিলে বিজেপি সংসদ অচল করার হুমকি দেয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাজেট অধিবেশন শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে দুঃখপ্রকাশ করায় সংসদ আপাতত সেই শঙ্কামুক্ত।
এই পদক্ষেপ অতিশয় জরুরি ছিল। সংসদ অবাধে চলিতে দেওয়া সব রাজনৈতিক দলেরই অবশ্যকর্তব্য। শাসক দলের যেমন, বিরোধী দলেরও তেমনই। কিন্তু বিরোধী দলের নেতাদের স্পর্শকাতরতা সর্বদাই শাসক দলের অপেক্ষা বেশি হয়। বিরোধী দল সম্পর্কে মন্তব্য করিতে গিয়া শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সতর্ক থাকিতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, শাসক দলের অনেক সাংসদই এই সতর্কতা অবলম্বন করেন না। আর তাহাতেই যত বিপত্তি। লক্ষণীয়, সুশীলকুমার শিন্দে দুঃখপ্রকাশ করামাত্র লোকসভার বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ এবং রাজ্যসভার বিরোধী নেতা অরুণ জেটলিও অসহযোগিতার হুমকি প্রত্যাহার করিয়াছেন।
তাহার অর্থ অবশ্য এই নয় যে, দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদের যাবতীয় উপলক্ষ অন্তর্হিত। অতীতে যেমন টেলিকম কেলেঙ্কারি, কয়লাখনি কেলেঙ্কারি ইত্যাদি লইয়া সংসদ অচল হইয়াছে, এ বারও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হেলিকপ্টার ক্রয় সংক্রান্ত অনিয়ম লইয়া সংসদ অচল করার চেষ্টা হইতে পারে। কেরলের একটি পুরানো গণধর্ষণ কাণ্ডে রাজ্যসভার ডেপুটি স্পিকারের ভূমিকা লইয়া যে বিতর্ক মাথা-চাড়া দিয়াছে, তাহাও অধিবেশন ভণ্ডুল করার প্ররোচনা হইতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার পক্ষের উচিত হইবে, সংসদের সুষ্ঠু ও অবাধ সঞ্চালনের স্বার্থেই অকারণ জিদ না-ধরিয়া অনিয়মের তদন্তের দাবি মানিয়া লওয়া। অতীতে দেখা গিয়াছে, শেষ পর্যন্ত সরকার বিরোধী পক্ষের দাবিই মানিয়াছে, অথচ শুরুতেই তাহা করিলে বহু ক্ষেত্রে সংসদের মূল্যবান অধিবেশন ফলপ্রসূ হইতে পারিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন হয়তো প্রধানমন্ত্রী ও সনিয়া গাঁধীর চাপে দীর্ঘ সময় পরে তাঁহার অবাঞ্ছিত মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করিলেন। অনেক আগেই কি ইহা করিয়া বিজেপি নেতৃত্বকে এই প্রশ্নে নিরস্ত্র করিয়া দেওয়া যাইত না? রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অভাবই বহু অনাবশ্যক বিতর্ককে জিয়াইয়া রাখে। ভবিষ্যতে শাসক দলকে আরও সজাগ থাকিতে হইবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.