নগরোন্নয়নের ভাবনা নামল আকাশ থেকে পাতালে।
কথা ছিল উড়ালপুল তৈরির। এখন বদলে হল সুড়ঙ্গপথ। মেটিয়াবুরুজের বিচালিঘাট থেকে খিদিরপুরের দইঘাট পর্যন্ত উড়ালপুলের বদলে তৈরি হবে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ পথ। বৃহস্পতিবার কেএমডিএ-এর পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
সংস্থার প্রাথমিক অনুমান, দু’লেনের এই সুড়ঙ্গপথ তৈরিতে খরচ হবে আনুমানিক ১৯০০ কোটি টাকা। এত টাকা কোথা থেকে আসবে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। রাজ্য পুর-দফতরের কর্তা এর সদুত্তর দিতে পারেননি। রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। তাঁর কথায়, “কেএমডিএ-তে গৃহীত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থ দফতরের কাছে পাঠানো হবে। তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, প্রকল্পের অর্থ সংস্থান কী ভাবে হবে।”
বৈঠকের পরে ফিরহাদ হাকিম জানান, গঙ্গার পাড় বরাবর ভূগর্ভস্থ দু’টি টানেল তৈরি করা হবে। দু’লেন বিশিষ্ট হবে ওই পথ। পুরমন্ত্রী বলেন, “বন্দর এলাকায় যে রাস্তাটি রয়েছে, তা খুবই ঘিঞ্জি। বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা রয়েছে। সেখানে প্রথমে একটি উড়ালপুলের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বন্দর-কর্তৃপক্ষ রাজি না হওয়ায় সুড়ঙ্গের পরিকল্পনা নেওয়া হল।”
এ দিন গঙ্গার পাড়ে ‘কলকাতা আই’ (লন্ডন আইয়ের অনুকরণে বিশালাকৃতি নাগরদোলা) প্রকল্প নিয়েও প্রস্তাব গৃহীত হয়। কেএমডিএ সূত্রের খবর, রাজ্যের পর্যটন দফতরের এই প্রকল্প রূপায়ণ করবে কেএমডিএ। বৈঠকের পরে পুরমন্ত্রী বলেন, “ওই প্রকল্পটি কেএমডিএ করছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প করতে দু’বছর সময় ধার্য হয়েছে।”
যদিও প্রকল্পটি ঠিক কোথায় হবে, তা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে প্রশাসন। কেএমডিএ সূত্রের খবর, প্রকল্পটির জন্য দ্রুত গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে। কিন্তু হাওড়ার দিকে ‘কলকাতা আই’ তৈরি হলে সেই প্রকল্প কতটা লাভজনক হবে, তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক-এ ‘ক্যালকাটা আই’ প্রকল্পটি রূপায়ণ করার পক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে।
পুরমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, “সমস্যা রয়েছে ঠিকই। তবুও প্রকল্প রূপায়ণের জন্য হাওড়া ও কলকাতা, দু’টি জায়গাই আমরা প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাবে রাখছি। এর পরে বিনিয়োগকারীরা কোথায় বেশি উত্সাহ দেখাবেন, তার উপরে ভিত্তি করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |