এইচআইভি-র মোকাবিলা
মা থেকে শিশুর সংক্রমণ রোধে এ বার নয়া ব্যবস্থা
ইচআইভি-আক্রান্ত মায়ের থেকে শিশুর মধ্যে রোগ সংক্রমণ আটকানো ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত করতে চিকিৎসা-পদ্ধতি বদলাচ্ছে ‘জাতীয় এড্স নিয়ন্ত্রণ সংস্থা’ (ন্যাকো)। পশ্চিমবঙ্গে তা প্রথম শুরু হবে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলিতে।
কী বদল আসছে চিকিৎসায়?
ন্যাকো-র অধিকর্তা সায়ন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রসবের ঘণ্টা দুই আগে এইচআইভি-আক্রান্ত আসন্নপ্রসবাকে এত দিন একটি নেভিরাপিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হত। এতে মা থেকে শিশুর মধ্যে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যেত। কিন্তু ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ই এখন বলছে, এই পদ্ধতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা থেকেই যায়। এইচআইভি-আক্রান্ত গর্ভবতীকে ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি’ বা ‘এআরটি’ দেওয়া অনেক বেশি কার্যকর। সায়নবাবুর কথায়, “এইচআইভি-আক্রান্ত মহিলার গর্ভাবস্থায় ১৪তম সপ্তাহ থেকে এআরটি চালু হয়ে যাবে। তা চলবে আজীবন। নেভিরাপিনের একটি ক্যাপসুলের বদলে এআরটি-তে মায়েরা একসঙ্গে তিনটি ওষুধ পাবেন। এতে রোগ প্রতিরোধ বাড়বে এবং মায়ের থেকে শিশুর দেহে এইচআইভি সংক্রমণের হার প্রায় শূন্য হয়ে যাবে।” অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকে এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত হয়েছে। ন্যাকো সূত্রে খবর, কয়েক মাসের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে এই নতুন প্রক্রিয়া চালু হবে। কলকাতায় ফলাফল কেমন হয় দেখে, এর পরে দফায়-দফায় জেলাতেও তা শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
ন্যাকো-র টেকনিক্যাল কমিটির পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সদস্য চিকিৎসক শুভাশিস ভট্টাচার্য জানান, জেলায় চালু করতে হলে প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতাল, মহকুমা ও সাব-ডিভিশন্যাল হাসপাতাল, সাব-সেন্টারে এআরটি-র সঞ্চয় নিশ্চিত করতে হবে। প্রথম দফায় সেটি করাটা একটু কঠিন। তাই প্রথমে কলকাতাকে বাছা-ই যুক্তি সঙ্গত। তাঁর কথায়, “অনেক সময়ে হাসপাতালে ভর্তির আগেই এইচআইভি-আক্রান্ত মায়ের বাচ্চা হয়ে যায়। তখন সময়মতো নেভিরাপিন খাওয়ানো যায় না। আবার, বহু জায়গায় এখনও চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় এইচআইভি-আক্রান্ত প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তিই হতে পারেন না। বাড়িতে কিংবা রাস্তায় সন্তান হয়ে যায়। এই সব ক্ষেত্রেও মা ও শিশুর নেভিরাপিন জোটে না। শিশুর ক্ষেত্রে সেটি খুব ঝুঁকির হয়ে যায়। নতুন নিয়ম চালু হলে মায়েদের ওষুধ অনেক আগে থেকে শুরু হবে। তাই শিশুর সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কমবে।”
এই নতুন পদ্ধতি প্রসঙ্গে কী মত কলকাতার এইচআইভি বিশেষজ্ঞদের?
‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’-এর এইচআইভি বিশেষজ্ঞ বিভূতি সাহা নতুন এই নিয়মকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর ব্যাখ্যায়, সারা বিশ্বই এখন ‘স্টার্ট এআরটি আর্লিয়ার’-এর প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। তাঁর কথায়, “প্রসূতিদের মাত্র একটি নেভিরাপিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হলেও মায়ের থেকে শিশুর দেহে রোগ সংক্রমণের খানিকটা ঝুঁকি থেকেই যায়। কিন্তু গর্ভাবস্থার ১৪ সপ্তাহ থেকে ভাবী মা টানা এআরটি শুরু করলে সংক্রমণের ঝুঁকি নিঃসন্দেহে কমবে। মায়েদের রোগও অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।” এইচআইভি বিশেষজ্ঞ শুভাশিস গুহ-ও জানিয়েছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আসন্ন প্রসবাদের এআরটি শুরু হয়েছে। এটি যে বেশি কার্যকর, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.