অর্থ নেই, বেহাল স্কুলে ঝুঁকি নিয়েই ক্লাস
নেই পর্যাপ্ত ঘর। নেই প্রাচীর। হোস্টেল ঘরটিও প্রায় বসবাস অযোগ্য। এই বেহাল দশার মধ্যেই ক্লাস চলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের দেবীপুর করুণাময়ী বালিকা বিদ্যায়াতন স্কুলে।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমান ছাত্রীসংখ্যা ৬৫০ জন। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই বিদ্যালয়ে স্থানীয় ছাত্রীরা ছাড়াও সোনারপুর, বারুইপুর, ক্যানিং, গোসাবা, ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ থেকে ছাত্রীরা পড়তে আসেন। বিদ্যালয়ে রয়েছে আটটি ঘর। তারমধ্যে তিনটি ঘর অ্যাসবেসটরসের ছাউনি দেওয়া। অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষের জানলার পাল্লা নেই। মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ ঘরে হচ্ছে ক্লাস। মিড ডে মিলের রান্না চলছে অস্থায়ী ছোট ঘরে।
রয়েছে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সমস্যা। প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকায় এই বিদ্যালয় অবস্থিত হওয়ায় কয়েক বছর আগে শিক্ষিকারা চাঁদা তুলে একটি টালির চালের হোস্টেল বাড়ি তৈরি করেছিলেন। বর্তমানে এই হোস্টেলে রয়েছেন ৩৫ জন ছাত্রী। সংস্কার না হওয়ায় সেই বাড়িটির দশাও শোচনীয়। হোস্টেলে রয়েছে একটি মাত্র নলকূপ। ফলে জলের সমস্যাও প্রবল।
এমন ভাঙাচোরা ঘরেই চলে ক্লাস। ছবি: দিলীপ নস্কর।
কেন এই সমস্যা?
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫-০৮ সাল পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ের জন্য সর্বশিক্ষা মিশনের যে টাকা বরাদ্দ হয়েছিল তার খরচের সময় তৈরি হয়েছিল সমস্যা। ৬টি ঘরের ছাদ তৈরি করার কথা থাকলেও ২টি ঘরে অ্যাসবেসটরসের ছাদ তৈরি করা হয়। ফলে জমা দেওয়া যায়নি ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’। তাই পরবর্তীকালে আর্থিক রাঅনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে সমস্যা।
বিদ্যালয়ের তৃণমূল পরিচালিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক অশোক দিন্দা ও সভাপতি শুকদেব প্রধান বলেন, “আগের সিপিএম পরিচালিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক ২০০৫ এর পর থেকে আসা বিদ্যালয় উন্নয়নের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করেননি। জমা দেওয়া হয়নি ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’। ভুগতে হচ্ছে আমাদের।” তাঁদের আরও অভিযোগ, জেলা প্রশাসনে আবেদন করার পর বর্তমানে যে অর্থ পাওয়া গিয়েছে তা যথেষ্ট নয়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। ফলে গরমে ও বর্ষাকালে বৃষ্টির সময় চরম অসুবিধায় পড়তে হয় ছাত্রীদের। বরাদ্দ খরচ না করতে পারার অভিযোগ অস্বীকার করে আগের সিপিএম পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রভুরাম মণ্ডল বলেন, “সে সময় যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল তাতে সব কাজ করা মুশকিল ছিল। অবস্থা এমন হয়েছিল যে ইট-বালি দূর থেকে বয়ে আনাও আমাদের কাছে বেশ খরচসাপেক্ষ ছিল। সমস্যার কথা আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম।” বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিতালি রায় বলেন, “বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। ২০১০-১১’ সালে যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি।”
জেলা শিক্ষা দফতরের প্রকল্প আধিকারিক সুজিত মাইতি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামাগত সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “আর্থিক সমস্যার জন্যই ওই বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব হচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.