|
|
|
|
অনুমতিতেও ‘আমরা-ওরা’ |
মেলায় বাজছে মাইক, নির্বিকার প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
শুরু হয়েছে মাদ্রাসা পরীক্ষা। শিয়রে মাধ্যমিক, আইসিএসসি বোর্ডের পরীক্ষাও। স্বভাবতই মাইক ব্যবহারে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু, সেই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ উঠল হলদিয়ায়। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মাইক ব্যবহারের অনুমতি পেল না সিপিএম পরিচালিত হলদিয়া পুরসভা। অথচ পুরসভার বিরোধী তৃণমূল নেতা দেবপ্রসাদ মণ্ডলের ক্লাবের মেলায় মাইক বাজছে তারস্বরে।
এমন পক্ষপাতিত্বে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস, বামফ্রন্ট-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অশোককুমার মিত্র জানান, “বহু বার থানায় গিয়েও ভাষা দিবসের মূল অনুষ্ঠানে মাইক বাজানোর অনুমতি পাইনি। জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে জানালেও কিছু হচ্ছে না। কিন্তু, সর্বত্র মাইক বাজছে।” |
|
মেলাপ্রাঙ্গণে সাউন্ড বক্স।—নিজস্ব চিত্র। |
বাস্তবেই দিন-রাত এক করে মাইক বাজছে হলদিয়া টাউনশিপের ব্রজনাথচকে আজাদ হিন্দ ক্লাবের ‘নেতাজি মেলা’য়। দুপুরে শুধু ঘণ্টাখানেকের নিস্তার। এই পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ এলাকার পরীক্ষার্থী থেকে সাধারণ মানুষ। এই মেলা চলার কথা ৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি। প্রশাসনের কাছে শব্দদূষণের বিষয়ে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। মেলা প্রাঙ্গণের পাশের বাড়ির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুস্মিতা প্রধানের কথায়, “সারা দিন জোরে মাইক বাজছে। পড়াশুনো হচ্ছে না। বাড়ি ছেড়ে যেতেও পারছি না। শুনছি মেলার সময়সীমা আরও বাড়বে।” আইসিএস পরীক্ষার্থী সুলগ্না ঘোষেরও একই অভিযোগ। তাঁর কথায়, “প্রবল আওয়াজে পড়াশুনো হচ্ছে না। মহকুমাশাসককে জানানোর পর দু’দিন বন্ধ থাকলেও, ফের বাজছে মাইক।”
দেবপ্রসাদবাবুর বক্তব্য, “মেলার মাইকের অনুমতি ছিল ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলার সময়সীমা বাড়ায় এই তিন দিন মাইকের অনুমতি নেই। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের জন্য ছেলেরা মাইক বাজাতে চাইলেও আমি বাধা দিয়েছি।” কিন্তু মাইক তো বাজছে দিব্য। মঙ্গলবার রাতে একবার পুলিশ এসে মাইক খোলার চেষ্টা করে। পারেনি। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পরে ফের মাইক চলছে। তবে তুলনায় আস্তে।
এই পরিস্থিতিতে দায় ঠেলছে পুলিশ-প্রশাসন।
জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, “মাইকের অনুমতি মহকুমাশাসক দিয়ে থাকেন। এতে পুলিশের ভূমিকা নেই।” পুলিশের দিকেই দায় ঠেলে মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্কর জানালেন, “পরীক্ষার মধ্যে মাইক বাজানো ঠিক নয়। সে রকম হলে আমি ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া, মাইকের অনুমতি পুলিশের মাধ্যমেই আমাদের কাছে আসে।”
এ দিকে, শুধু মাইক বাজানো নয়, মেলার খরচ তুলতে ওই ক্লাব ‘তোলা’ তুলেছে বলেও অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “নতুন বাড়ি করেছি। জোর করে টাকা আদায় করেছে আজাদ হিন্দ ক্লাব। দেব না বললে চোখরাঙানি চলছে।”
এ দিকে, ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মাইক বাজানোর অনুমতি না-পেয়ে ক্ষুব্ধ পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠ। তিনি বলেন, “পরীক্ষার জন্য অনুমতি না দিলে কিছু বলার নেই। কিন্তু, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে অনুমতি না দিয়ে, মেলায় মাইকের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এটা ভাবতে খারাপ লাগছে। প্রশাসন নগ্ন পক্ষপাতিত্ব করছে।” |
|
|
|
|
|