প্যান্ডোরার বাক্স খুলতেই মিলল কপ্টার ঘুষের সূত্র
ভেবেছিলেন কম্পিউটার থেকে সব তথ্য মুছে ফেলেছেন। কিন্তু তেমনটা যে হয়নি, যখন টের পেলেন, দেরি হয়ে গিয়েছে। পুলিশের হাতে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’।
ইনি গুইডো হাশকে, কপ্টার-কাণ্ডে মধ্যস্থতাকারী অন্যতম অভিযুক্ত। ইতালির গোয়েন্দারা জানান, হাশকের কম্পিউটারে ‘প্যান্ডোরাস বক্স’ নামে একটা ড্রাইভ দেখেই সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের।
ড্রাইভ খুলতেই কপ্টার দুর্নীতিতে ফিনমেকানিকা কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, ইতালি-লুগানো-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক লেনদেনের তথ্য, এমনকী কোন কোন ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে, বেরিয়ে এল এমনই সব তথ্য। হাশকের মায়ের বাড়ি থেকে আগেই উদ্ধার হয়েছিল, টাকাপয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু কাগজপত্র। তার পরে হাশকের কম্পিউটার হার্ড ড্রাইভের ওই তথ্যগুলো, গোয়েন্দাদের অর্ধেক রহস্য সমাধান করে দিয়েছে।
ইতালির আদালতে কপ্টার-দুর্নীতির শুনানি চলাকালীন একে একে প্রকাশ্যে আসছে এমনই সব তথ্যপ্রমাণ। আর ৩৬০০ কোটি টাকার চুক্তি করতে ফিনমেকানিকা প্রধান গুইসেপে ওরসি যে ৩৬০ কোটি ঘুষ দিয়েছিলেন, ক্রমেই জোরদার হয়ে উঠছে তা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কম্পিউটার থেকে সব তথ্য মুছে দিয়ে হাশকে ভাবেন, তাঁকে ধরার সম্ভাবনা নেই। ইতালির সংবাদপত্র লিখেছে, ওরসি-র ভাগ্য এখন ‘হাশকের বাক্সে’। কারণ, ওরসিই কপ্টার লেনদেন চুক্তিতে হাশকে-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। যদিও ফিনমেকানিকা-প্রধান এ কথা অস্বীকার করছেন। গোয়েন্দাদের রিপোর্টে ওঠে আরও একটি নাম ক্রিশ্চিয়ান মিশেল, যাঁর বাবার সঙ্গে ৯০’-এর দশকে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠতা ছিল।
ইতিমধ্যে, ইতালিতে শুরু হওয়া দুর্নীতি-মামলায় ভারতের হয়ে সিবিআই আইনজীবী নিয়োগ করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাস, এতে ইতালির থেকে প্রয়োজনীয় নথি পেতে সুবিধা হবে। সিবিআইয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দলও আগামী কাল ইতালি রওনা দেবে। আজই কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন ৩৬০০ কোটি কপ্টার-দুর্নীতির রিপোর্ট চেয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে।
কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে যখন দেশ জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময় দেশে পা রাখছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। মূল সংস্থা ফিনমেকানিকা ইতালির হলেও, অগস্তাওয়েস্টল্যান্ড ব্রিটিশ। যে এক ডজন কপ্টারের চুক্তি হয়েছিল ফিনমেকানিকার সঙ্গে, তার মধ্যে তিনটি কপ্টার হাতে পেয়েছে ভারত। এই তিনটিই তৈরি হয়েছে ব্রিটেনে। তাই এই মুহূর্তে ক্যামেরনের দেশে আসা যথেষ্টই উল্লেখযোগ্য। ভারত ইতিমধ্যেই তদন্তে সাহায্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকারকে। প্রাথমিক ভাবে ব্রিটেনের জবাবে কেন্দ্র সন্তুষ্ট না হলেও, ক্যামেরনের ভারত সফরকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক।
ভারত যখন ক্যামেরনের থেকে তথ্য পাওয়ার আশায়, তখন ভারতে এসে একটা বড়সড় অর্থের চুক্তি বাগাতে চাইছেন ক্যামেরন। শোনা যাচ্ছে, ক্যামেরন চাইছেন ভারতকে অন্তত ১০০টি ইউরোফাইটার জেট বেচতে। গত বছর ফরাসি যুদ্ধবিমান সংস্থা ১০০০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছিল ভারতের সঙ্গে। এ বারে ভারত থেকে সদ্য খালি হাতে ফিরে গিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। কোনও মতেই এই সুযোগ হারাতে চান না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.