নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সরকারি পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কড়া আইন করছে রাজ্য। এর নাম দেওয়া হচ্ছে সরকারি পরিষেবা অধিকার আইন। এ নিয়ে শনিবার দুপুরে মহাকরণে বিভিন্ন দফতরের সচিবদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র। সম্প্রতি কালে ভাঙড়ের এক সভায় নিজের প্রশাসনেই বিরোধী দলের কর্মীরা রয়েছেন অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি ছিল, ওই সব কর্মীর জন্যই রাজ্য সরকারের কাজকর্মের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, এই বার আইন করে সরকারি কর্মীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে চাইছে রাজ্য।
মহাকরণ সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের ঋণপ্রকল্প, রেশন কার্ড, জমির নথিভুক্তি, কিষাণ কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বন্দুকের লাইসেন্স, পানীয় জলের অধিকার, শিল্প সংক্রান্ত আবেদন, স্বাস্থ্যের অধিকারের মতো নানা পরিষেবা মানুষকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেওয়ার কথা। তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা। অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তাঁর নির্দেশে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের অধীনে সচিবস্তরে কমিটি তৈরি করা হয়। সম্প্রতি সেই কমিটি একটি রিপোর্টও দেয়। তার পরই এ দিন বৈঠক ডাকেন মুখ্যসচিব। ওই বৈঠকে স্বাস্থ্য, পূর্ত, পরিবহন, শিক্ষা, পর্যটন, পঞ্চায়েত, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ, শিল্প-বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, পুলিশ প্রভৃতি দফতরের সচিব-অফিসারেরা উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি সূত্রটি জানান, তথ্যের অধিকার আইনের ধাঁচে তৈরি নতুন আইনে প্রতিটি দফতরে এক জন করে নজরদারি অফিসার থাকবেন। সব দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে না-পারলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের আর্থিক জরিমানার ব্যবস্থাও থাকছে এই নতুন আইনে। এ ছাড়া, তথ্য কমিশনের মতো একটি স্বশাসিত কমিশনও গড়া হবে বলে খবর আছে। এর আগে ২০১০ এর অগস্টে মধ্যপ্রদেশ প্রথম এই ধরনের আইন পাশ করে। বিহার, দিল্লি, রাজস্থান, কেরল, ঝাড়খণ্ড-সহ ১৫টি রাজ্যে এই ধরনের আইন পাশ হয়েছে। |