ভোটবিধি ভাঙার নালিশ বাম-কংগ্রেসের
সচিবদের বারণ না মেনেই বদলির নয়া জটে মমতা
নির্বাচনী বিধির বাধা রয়েছে, জানিয়েছিলেন মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। কিন্তু তাঁদের পরামর্শ উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে বদলি করে কলকাতা পুলিশের কমিশনার পদে বসিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএম-কংগ্রেস উভয় দলই শনিবার এ নিয়ে বিধিভঙ্গের নালিশ ঠুকেছে নির্বাচন কমিশনে। বিধিভঙ্গের এই জোড়া অভিযোগ দিল্লিতে কমিশনের দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত।
মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে ওই বদলি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এ দিন তিনি বলেন, “কমিশন তো এখনও কিছু বলেনি। তারাই দেখুক বৈধতা আছে কি না। তারা যা বলবে, সেটাই শিরোধার্য।” কমিশন সূত্রের খবর, দু’এক দিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে কমিশন তাদের চূড়ান্ত মত জানাবে।
রঞ্জিত পচনন্দার বদলি প্রসঙ্গে মহাকরণে বৈঠক মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের। —ফাইল চিত্র
রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এর তিন দিন পর স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় নোটিস জারি করেন (১৫১-হোমই-ইএলইসি), রাজ্য পুলিশের ডিজি, আইজি, এডিজি, আইজি (আইন-শৃঙ্খলা)-সহ মোট ৯ জন অফিসার এবং তাঁদের অধীনস্থ পুলিশকর্মীরা নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে কমিশনের আওতায় ডেপুটেশনে থাকবেন। তাঁদের উপর যাবতীয় অধিকার (নিয়ন্ত্রণ-নজরদারি-শৃঙ্খলা) নির্বাচন কমিশনের।
কিন্তু গার্ডেনরিচে দুষ্কৃতীর গুলিতে পুলিশকর্মী তাপস চৌধুরীর মৃত্যুর দু’দিন পরে দিঘা থেকে ফিরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে বদলির কথা শুনে প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তাই তাঁদের আপত্তির কথা জানান। নির্বাচন নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের ১৪ জানুয়ারির ওই নোটিসের কথাও জানানো হয় তাঁকে। কিন্তু কোনও কথায় কর্ণপাত না করে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। অফিসারদের বদলির আদেশে সই করার নির্দেশ দিয়ে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, “আমি দেখে দেব।” এই অবস্থায় রদবদলের ফাইলে সই করতে বাধ্য হন সরকারি কর্তারা। রঞ্জিতকুমার পচনন্দাকে সরিয়ে এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা)-কে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন রাতেই সরকারি ভাবে নতুন দায়িত্ব নেন সুরজিৎবাবু।
কিছু দূরে
মহারাষ্ট্র নিবাস হলে এক অনুষ্ঠান থেকে বেরোচ্ছেন মমতা। পিছনে ফিরহাদ হাকিম। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
সরকারি কর্তাদের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত অভিযোগ আকারে পৌঁছে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের দফতরে। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন এই বদলি করে রাজ্য সরকার নির্বাচনী বিধি ভেঙেছে বলে নিখিত অভিযোগ এনেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। তাদের দাবি, কমিশন এ ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করুক।
এ দিন সিপিএম নেতা রবীন দেবের নেতৃত্বে বামফ্রন্টের প্রতিনিধি দল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের সঙ্গে দেখা করে একগুচ্ছে অভিযোগ জানান। পরে রবীনবাবু দাবি করেন, “পুলিশ অফিসারদের বদলি করায় যে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত।” তাঁর কথায়, “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এক বার দুর্গাপুরে নির্বাচনে প্রচারে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক সুব্রত গুপ্ত। বিধিবঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন তাঁকে কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠানোর নির্দেশ দেন।” কমিশনের কাছে অভিযোগ পেশের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, “উপনির্বাচনের প্রক্রিয়া চলাকালীন এই বদল সাংবিধানিক ভাবে বিধিসম্মত নয়। উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক নির্বাচন কমিশন।”
মাথাব্যথা
গার্ডেনরিচ থানায়
ঢুকছিলেন নতুন সিপি।
ঢুকতে গিয়েই গাছের
ডালে মাথা ঠুকল।
এক মুহূর্তের জন্য
থমকে গেলেন সিপি।
সামলে নিলেন
নিজেকে।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বলেছেন, “কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা পুলিশ অফিসারদের বদলির ব্যাপারে রাজ্য সরকার এখনও কিছু জানায়নি। আমরা এই নিয়ে দু’টি অভিযোগ পেয়েছি। তা নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়েও দিয়েছি।” যদিও কমিশন সূত্রের খবর, বদলি নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী অফিসার নিজেও একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন দিল্লিতে।

ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.