মেয়ের জন্য কার্ড দেখেও
আফসোস নেই চিডির
ইস্টবেঙ্গল: ৪ (বলজিত ২, চিডি, খাবরা)
সাদার্ন সমিতি: ০
গোলটা করার পরই লাল-হলুদ জার্সি কার্যত খুলে কর্নার ফ্ল্যাগের দিকে ছুটলেন এডে চিডি। এত দ্রুততায় যে, মনে হচ্ছিল বিমানবন্দরে নেমে লাগোসের বাড়িতে যাচ্ছেন সদ্যোজাত মেয়েকে দেখবেন বলে।
দেখা গেল লাল-হলুদ জার্সির নীচে লাল গেঞ্জিতে লেখা “ওয়েলকাম মাই বেবি প্রিন্সেস।” ম্যাচের আগেই বলে দিয়েছিলেন, শনিবার গোল করলে তা উপহার দেবেন প্রেসাসকে। খেলার শেষ দিকে সামান্য পা ছুঁইয়ে প্রত্যাশিত গোল করার পর সে কী উচ্ছ্বাস নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের। আনন্দের জোয়ারে ভাসার ‘শাস্তি’-ও পেলেন হলুদ কার্ড দেখে। কিন্তু আজ তো ‘কুছ পরোয়া নেহি।’ মেয়ের জন্য বিশ্বের কোনও ‘অপরাধ’-কেই তোয়াক্কা করতে যেন তিনি রাজি নন! পরপর দু’বার সন্তানসম্ভবা হয়েও তাঁর স্ত্রী শেষ পর্যন্ত নানা কারণে সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। এ বার যে চিডির মনের বাসনা পূরণ হয়েছে। “আমার বেবি প্রিন্সেসের জন্য তো এটুকু করাই যায়। হলুদ কার্ড দেখার পর তাই কোনও দুঃখ হয়নি। অন্য সময় হলে অবশ্য দুঃখ পেতাম,” বলছিলেন প্রেসাসের বাবা।
শপথ রক্ষা। সদ্যোজাত মেয়ে প্রেশাসকে গোল উপহার চিডি এডের।
উৎসবে মাতলেন সতীর্থরাও। শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
তবে সাদার্নের স্টপার ইমানুয়েলকে মার্কার করে দিয়ে চিডিকে থামাতে চেয়েছিলেন সাব্বির আলি। কিন্তু এডে চিডিকে শনিবারের ‘মঞ্চে’ আটকে রাখা সম্ভব ছিল না। ম্যাচের পর লাল-হলুদ গোলমেশিন বললেন, “এই গোলটা আমার মেয়েকে উপহার। মেয়েকে সামনা-সামনি দেখারও কোনও উপায় নেই। তবু ওকে এই উপহারটা দিতে পেরে আমি খুব খুশি।” লাল-হলুদ ফুটবলাররাও চিডির এই আনন্দে শামিল হয়েছেন নানা ভাবে। মাঠে বা ড্রেসিংরুমে। সাদার্নের বিরুদ্ধে ৪-০ গোলের দুর্দান্ত জয়টা তাই ওপারা, পেন, ইসফাক, খাবরারা উৎসর্গ করলেন ছোট্র প্রেসাসকেই।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য মার্কোস, ইমানুয়েলদের কাছে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল মর্গ্যান বাহিনীকে। প্রথমার্ধে গোলশূন্য ভাবেই ম্যাচ শেষ হয়। রেফারির ঘন ঘন বাঁশি, ফাউল আর বলজিতের দুটো সহজ সুযোগ নষ্টএই ছিল প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্রাপ্তি। এরই মধ্যে আবার সাব্বির আলি আর ট্রেভর মর্গ্যানকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা গেল। পরে লাল-হলুদ কোচ জানালেন,রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে নাকি দু’জনে আলোচনা করেছেন মাত্র। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় নয়।
তবে ম্যাচের পর রেফারিং নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিতে এ দিনও ভুললেন না মর্গ্যান। বিরতির পর দেখা গেছিল, চতুর্থ রেফারির কাছে ছুটে গিয়ে কিছু যেন অভিযোগ করছিলেন সাহেব কোচ। ম্যাচের পর বললেন, “জঘন্য রেফারিং। কলকাতা লিগের ম্যাচে যে হতশ্রী রেফারিং হচ্ছে সেটা আর নেওয়া যাচ্ছে না।”
রেফারির পারফরম্যান্সে যতটা অসন্তুষ্ট ততটাই বিরক্ত নিজের ফুটবলারদের প্রথমার্ধের পারফরম্যান্সে। বিরতির আগে ইস্টবেঙ্গল কোনও গোল না পাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইসফাকের পরিবর্তে মননদীপকে নামিয়ে আক্রমণে শক্তি বাড়ান মর্গ্যান। ফলও পান হাতেনাতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পেনের মাইনাস থেকে হেডে অসাধারণ গোল করেন বলজিৎ। ব্যবধান বাড়াতেও বেশি সময় নেননি পঞ্জাব তনয়। আর দ্বিতীয় গোলটা এল চিডির অসাধারণ পাস থেকে। নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে এই মরসুমের ছয় নম্বর গোলটি করে টানা তিনটি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের চার গোল করার রেকর্ড গড়লেন খাবরা।
এ দিকে ইস্টবেঙ্গলের কাছে বড় ব্যবধানে হারের পর সাদার্নের কোচ পরিবর্তনের হাওয়া আরও জোরালো হল। সাব্বিরের পরিবর্তে শোনা যাচ্ছে সুব্রত ভট্টাচার্যের নাম। সুব্রত অবশ্য এখনও রাজি হননি।

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, খাবড়া, সুনীল, ওপারা, সৌমিক, ইসফাক (মননদীপ) (লোবো), ভাসুম (সঞ্জু), লালরেন্দিকা, পেন, চিডি, বলজিৎ।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.