অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই ভারত ‘এ’ দলের অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর চেন্নাই থেকে প্রথম ফোনটা করলেন তাঁর ব্যক্তিগত কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজকে।
কী বললেন? “স্যর সেঞ্চুরি করেছি। আপনাকে বড় রান করার কথা বলে এসেছিলাম। সেটা করতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে,” বলতে বলতে তখনও নাকি হাঁফাচ্ছিলেন গম্ভীর। একটু থেমে তাঁর আরও সংযোজন, “আপনার সঙ্গে অনেক কথা বলার আছে। হোটেলে ফিরে আবার ফোন করছি।”
তার মধ্যেই আনন্দবাজারের ফোন পেয়ে শিষ্যের সাফল্যে আনন্দিত কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজ বললেন, “ওর এই সেঞ্চুরিটা সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্য। এই সেঞ্চুরিটার জন্যই ও অপেক্ষা করে ছিল। আজই আপনাকে বলে দিচ্ছি, ওকে আর থামানো যাবে না। পরে আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।” এখানেই থেমে না থেকে সঞ্জয় আরও বললেন, “আরে ভাই, এই সময়টা সব ক্রিকেটারের কেরিয়ারেই আসে। যারা সামলে নেয়, তারা বড় খেলোয়াড়। আর যারা পারে না তারা হারিয়ে যায়। গৌতম বরাবরই প্রথম দলে পড়ে।”
আজ যেন আর থামতেই চাইছেন না গোতির কোচ। স্বাভাবিক। আজকের দিনটা তাঁর শিষ্যের পাশাপাশি তো তাঁর নিজেরও। গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলেন গম্ভীরের শনিবারের ইনিংসের খুঁটিনাটি। “মাত্র ১৬২টা বলের মুখোমুখি হয়ে নিখুঁত খেলে ১১২ রান করেছে গম্ভীর। তার মধ্যে হাঁকিয়েছে তিনটে বিশাল ছক্কা আর তেরোটা বাউন্ডারি। স্ট্রাইকরেট ৬৯.১।”
ছাত্রের এই লড়াকু মানসিকতার ব্যাখ্যা কী ভাবে দেবেন আপনি? সঞ্জয়ের কথায়, “গোতি চিরকালই চাপা স্বভাবের ছেলে। কোনও দিনই ও খুব বেশি কথা বলা পছন্দ করে না। ওর হয়ে ওর ব্যাটই সব সময় কথা বলে এসেছে।” তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “ও নিজে অন্তর্মুখী হলে কী হবে, গোতির মনোবল ইস্পাতের মতো কঠিন। ও মনে-মনে যেটা এক বার ঠিক করে ফেলে, সেটা করে না দেখানো পর্যন্ত শান্তি পায় না।”
গম্ভীরের জন্যে অবশ্য এ দিন আরও সুখবর অপেক্ষা করে ছিল। যেটা তিনি পেলেন তাঁর কোচের মুখ থেকে। কী? না, গম্ভীরের সেঞ্চুরি করার দিনে দুর্দান্ত খেলেছে দিল্লিতে তাঁর অন্যতম ভক্ত এক তরুণ ক্রিকেটার। দিল্লির ঘরোয়া লিগে ১৭ বছরের সেই অফস্পিনার বিকাশ দীক্ষিত ‘পারফেক্ট টেন’-এর নজির গড়েছে। কোচ বলছিলেন, “গৌতমকে বললাম বিকাশের কথা। বিকাশের দশটা উইকেটই ডিটিসি-র বিরুদ্ধে আমাদের দল কেজি কোল্টকে জিতিয়েছে।” গম্ভীর-ভক্ত বিকাশও সঞ্জয় ভরদ্বাজের ছাত্র। ভরতনগরের নেটে গম্ভীর-উন্মুক্ত চন্দের পাশাপাশি অনুশীলন করে। তরুণ ভক্তের সাফল্যে গম্ভীর যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত বলেই জানালেন তাঁর কোচ।
হোটেলে ফিরেও কোচকে ফোন করতে ভোলেননি গম্ভীর। এ বার কী বললেন তিনি? “ও পরের বার বলল, দিল্লি ফিরেই আমার নেটে চলে আসবে। টেকনিক্যাল কয়েকটা জিনিস নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করতে চায়।” |