|
|
|
|
মোদীকে ঠেকানোর কৌশল |
মজবুত করুন সংগঠন, বার্তা রাহুলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। সংগঠন দুর্বল হলে হাজার নজরকাড়া প্রচারেও লাভ হবে না। আজ দলীয় বৈঠকে এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাহুল গাঁধী।
দেশে দলের অবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য সব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে দেড় দিনের বৈঠক করেন রাহুল। আজ সেই বৈঠকে গুজরাতের কংগ্রেস নেতা অর্জুন মোধওয়াড়িয়া দাবি করেন, গুজরাতের বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর প্রচার-যুদ্ধের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। মোদী প্রচারের জন্য সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছেন। অর্জুনের মতে, মোদীর এই চমক লাগানো প্রচারের মোকাবিলা করার জন্য কংগ্রেসকেও নিজের রণকৌশল ঠিক করতে হবে। দিল্লি থেতেও মোদীর ‘মিথ্যে প্রচার’-এর জবাব দিতে হবে। রাহুল সাফ জানান, নিচু স্তরে সংগঠন না থাকলে টিভি-রেডিওয় প্রচার চালিয়ে কিছু হবে না। সংগঠন থাকলে ইউপিএ সরকারের সাফল্য ও দলের বক্তব্য সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। অতএব, সংগঠন মজবুত করতে সব রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার দাবিতে শোরগোলও না-পসন্দ রাহুলের। এই বৈঠকে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণার দাবি তোলেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুণা। অনেকে তাঁর সঙ্গে গলা মেলানোর চেষ্টা করেন। সঙ্গে সঙ্গে রাহুল বলেন,“আমি এ কথা দ্বিতীয় বার শুনতে চাই না।” থতমত খেয়ে যান সকলে। রাহুল জানান, এই দাবিতে মনমোহন সিংহ ও তাঁর সরকার খাটো হচ্ছেন। সেটা ঠিক নয়।
বরং রাজ্যে কিছু কাজ না করেই নেতাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে যাওয়ার সমালোচনা করেছেন রাহুল। জানান, উত্তরপ্রদেশে দল কিছুই করতে পারছে না। কারণ, জেলা কংগ্রেসের সভাপতিরা কোনও কাজই করেন না। অথচ খুঁজলে ২০০ জন মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী মিলবে। এমনকী, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব পদের প্রার্থীও রয়েছেন।
দেড় দিনের বৈঠকের পরে কংগ্রেস নেতাদের ধারণা, গোটা দলের কর্মসংস্কৃতি বদলে ফেলতে চান রাহুল। প্রয়োজনে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ হতেও রাজি তিনি। রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের তাঁর নির্দেশ, প্রদেশ কংগ্রেসের অফিসে বসে থাকা চলবে না। মাসের অন্তত দশ দিন জেলায় জেলায় ঘুরতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে নিয়ে কাজে নামতে হবে। দলবাজি বন্ধ করতে হবে। কাজের নিরিখে ভোটের টিকিট অথবা সংগঠনে পদোন্নতি মিলবে। কাজ করতে না পারলে দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হবে।
বিভিন্ন রাজ্য থেকে টিকিট বণ্টন নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। রাহুল জানান, চার-পাঁচটি মাপকাঠি ঠিক হবে। তার ভিত্তিতেই টিকিট দেওয়া হবে। আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা নিয়েও সুস্পষ্ট রণকৌশল তৈরির দাবি উঠেছে বিভিন্ন রাজ্য থেকে। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য আজ রাহুলকে জানান, রাজ্যে মমতার জনপ্রিয়তা কমছে। সেই শূন্যস্থান যদি কংগ্রেস পূরণ করার চেষ্টা না করে, বামেরা তা দখল করে নেবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের পরে বামেদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার দরজা খুলে রাখতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত ভোটেও কংগ্রেসের সঙ্গে নিচু তলায় আঁতাঁত তৈরির প্রস্তাব আসছে সিপিএমের তরফ থেকে। রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা অবশ্য এর পক্ষে নন। রাহুল জানান, প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসবেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গেও যাবেন। সেখানেই এ নিয়ে আলোচনা হবে। পশ্চিমবঙ্গের মতো ঝাড়খণ্ডের নেতা প্রদীপ বালমুচুও শিবু সোরেনের সঙ্গে জোট হবে কি না, সে বিষয়ে পাকা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি তুলেছেন। অন্ধ্র থেকে দাবি উঠেছে, তেলেঙ্গানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। |
|
|
|
|
|