খুনের দায়ে যাবজ্জীবন
বন্দি মনের ছবির একক প্রদর্শনী
নিজের আঁকা ছবিকেই আঁকড়ে ধরে জীবনের বাকি ক’টা দিন বাঁচতে চান চিন্ময় বসু। গত বছর দুই ধরে দিনরাত নিজের মনে ছবি এঁকে চলেছেন মালদহ জেলা সংশোধনাগারে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই বন্দি। খুনের দায়ে সাজাপ্রাপ্তকেই বেশিরভাগ মানুষই ঘৃণা করে থাকে। কেউবা এড়িয়ে চলেন। কিন্ত ব্যতিক্রম মালদহের পরম ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা। এই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির প্রতিভাকে তুলে ধরতে তাঁর আঁকা ৩০টি ছবি সরস্বতী পুজো মন্ডপে প্রর্দশনী করে বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন সোসাইটির সদস্যরা। চিন্ময়বাবুর পাঁচটি ছবি ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
পরম ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক সোমা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সংশোধনাগারে থাকাকালীন চিন্ময়বাবু ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। নতুন ভাবে বাঁচার চেষ্টা করছেন। আমরা তাঁর বেঁচে থাকার লড়াই সাহায্য করছি মাত্র। এখন তিনি একের পর এক ছবি এঁকে চলেছেন। যা আমাদের সবাইকে একরকম অবাক করে দিয়েছে।”
শুক্রবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা।
চিন্ময়বাবু এক জন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। রেলে চাকরি করতেন। শ্যালককে খুনের দায়ে গত ২০০৭ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মালদহ জেলা সংশোধনাগারে তিনি বন্দি। জেলা সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “পাঁচ বছর কারও সঙ্গে কথাই বলতেন না। দুই বছর আগে ছবি আঁকা শুরু করেন। ৪০০-র বেশি এঁকেছেন। ছবির নেশায় রাতে ঘুমান না। জোর করতে ঘুমোতে পাঠাই।”
সুপার জানান, এতদিন চাকরি করছি। বহু বন্দি দেখেছি। বন্দিদের নানা রকম চাহিদা থাকে। চিন্ময় বসুর আমার কাছে একটাই আবদার, আর্ট পেপার দিন। রং ,তুলি দিন। উনি যেখানে থাকেন, সেখানে ওঁর আঁকা প্রচুর ছবি জমে গিয়েছে। পুজো মন্ডপে চিন্ময়বাবুর যে ছবিগুলি প্রর্দশিত হয়েছে, তার বেশিরভাগের বিষয়-মুক্তি। বন্ধ কারাগারে ছোট একটি জানালা দিয়ে এক টুকরো সূর্যের আলো ঢুকছে। আর বিচারাধীন বন্দিরা সেই আলোর দিকে তাকিয়ে আছেন। সংশোধনাগারে বন্দিদের দেখতে পরিবারের লোকজন আসছেন। বন্দিদের চোখে জল। রয়েছে মহাভারতের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুন, স্বামী বিবেকানন্দ, মাদার টেরেজার ছবি। ছবির নিচে লেখা, চিন্ময় বসু-কয়েদি নম্বর ৫৭৪১।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.