রাজ্য সরকারের গীতাঞ্জলি প্রকল্পে সংখ্যালঘুদের জন্য বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সমস্যায় পড়েছেন ঠিকাদাররা। সমস্যায় পড়েছেন বাড়ির বেনিফিশিয়ারি।
বছরখানেক আগে গরিব সংখ্যালঘুদের বাড়ি তৈরির জন্য গীতাঞ্জলি প্রকল্প ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। প্রকল্পে বাড়ির যে চিত্র রয়েছে তা হল, ১০ ফুট বাই ১০ ফুট একটি শোওয়ার ঘর, ৯ ফুট বাই সাড়ে ৭ ফুট রান্নাঘর ও ৬ ফুট চওড়া বারান্দা। বাড়িতে থাকবে পাঁচটি জানলা ও একটি দরজা। বাড়ির ভিতরের অংশে প্লাস্টার থাকবে। উপরে থাকবে তিন ইঞ্চির মোটা ছাদ। প্রকল্পে একটি বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক বরাদ্দ ১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা। ওই পরিমাণ টাকায় দিয়ে সরকারি নির্দেশ মেনে বাড়ি থৈরি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন ঠিকাদার ও যাঁর জন্য বাড়ি তৈরি হচ্ছে দু’পক্ষই। বহু বেনিফশিয়ারির পছন্দ, তিন ইঞ্চি কংক্রিটের ছাদের বদলে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ছাদ। কিন্তু ঠিকাদারেরা সরকারি নির্দেশ অমান্য করতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষই প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। |
কাকপুকুর গ্রামে প্রকল্পে নির্মীয়মাণ বাড়ি। ছবি: দিলীপ নস্কর। |
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে গীতাঞ্জলি প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেলেও ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মথুরাপুর-১ ও মথুরাপুর-২ ব্লকে এই প্রকল্পের কাজ মাস কয়েক আগে শুরু হয়েছে। মথুরাপুর-১ ব্লকে ১৯০টি এবং মথুরাপুর-২ ব্লকে ২০৩টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন মিলেছে। আর এই বাড়িগুলি তৈরি করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে ঠিকাদারদের। পছন্দমত অ্যাসবেস্টস ছাউনি পেতে ওই সব বেনিফিশিয়ারি ব্লক প্রশাসনের কাছে দরবার করছেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। কোথাও আবার ঠিকাদারদের ঢিলেমির জন্য শুরুই হয়নি কাজ। অথচ মাসদুয়েক আগে আর্থিক অনুমোদনের পর ঠিকাদারেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাড়ির জন্য জায়গা চিহ্নিত করার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছিলেন। যাঁদের অন্য জায়গা নেই তাঁরা নিজেদের ঘর ভেঙেই বাড়ি তৈরির জায়গা ঠিক করে রেখেছেন। কিন্তু এতদিনেও কাজ শুরু না হওয়ায় বাধ্য হয়ে এখানে-ওখানে রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা। মথুরাপুর-১ ব্লকের নালুয়া পঞ্চায়েতের কাকপুকুর গ্রামের মেহের আলি ঠিকাদারদের কথায় ঘর ভেঙে নতুন ঘর তৈরির জায়গা করে রেখেছিলেন। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় পরিবার-সহ প্রতিবেশীর বাড়ি ঠাঁই নিয়েছেন।
মথুরাপুর-১ এর বিডিও সৌমেন মাইতি বলেন, “তিন ইঞ্চির ছাদের পরিবর্তে অ্যাসবেস্টসের ছাউনির জন্য প্রায় ৬০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সমস্ত বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “যে ধরনের বাড়ি তৈরির জন্য অনুদান এসেছে, সেই ভাবেই কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নেই।” |