ডাক দিল বসন্তের প্রথম উইকএন্ড
প্রেম কোনও বাঁধ মানে না।
বৃহস্পতিবার যদি হয় ভালবাসার দিন, বাসন্তী শাড়ির সরস্বতী পুজো শুক্রবার, পরের দিন বসন্তের প্রথম উইকএন্ড, তার পরের দিন ছু-উ-উ-টি! স্কুলে-কলেজে দেবী, কুঞ্জে কোকিল-মুকুল, হৃদি জুড়ে বাইসাইকেল! থুড়ি, বাইক.... এই পথ যদি না শেষ হয় (রঙিন)...
কিন্তু যাবে কোথায় সোনা? সেই তো এক কুমারমঙ্গলম পার্ক! ভ্যালেন্টাইনস ডে না-হয় এক রকম করে কেটেছে। ভিড় জমেছে ফুলের দোকানে, গিফ্ট স্টলে। কার্ড, চকোলেট, লুকোচুরি সন্ধে পার করে সরস্বতী পুজোর সকাল। জয় জয় দেবী চরাচর সারে... সবে ফাগুন পড়েছে। বিকেলে দামোদরের উতল হাওয়া। এ বার? এই মহা-উইকএন্ড কী চায়?
আগে বরং এক ঝলক দেখে নিই দুর্গাপুরের হৃত্‌কেন্দ্রে কুমারমঙ্গলম পার্কের কী দশা। ছলোছলো জলের পাশে সাজানো বাগানে প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য নিরিবিলি ‘লাভার্স জোন’। সেখানে গাছের ফাঁকে-ফোকরে ঘনিয়ে আসা আবেগ দেখতে সন্ত ভ্যালেন্টাইন বা বাগ্দেবীর জন্য চাতক-প্রতীক্ষা করতে হয় না। বৃষ্টি-বাদলা না হলে রোজই মোটামুটি হাউসফুল। বজ্জাতেরা টোন কাটে ‘মাসি’ ‘বোন’ ‘কাকু’ বলে বড্ড আপন করে নিতে চায়। খাকি উর্দিও লাঠি নাচায় মাঝে মাঝে।
কিন্তু চার দিনের এই সিজ্‌নটা এক্কেবারে আলাদা। এখন ভালবাসার পিছনে লাগাই পাপ! কোকিলেরা আড়মোড়া ভাঙছে, প্রেম বেপরোয়া। হাতে-হাত, কানে ঠোঁট, লাল টপে নীল টিশার্ট। লাভার্স জোন রং করা হয়েছে সদ্য। বিপত্তি এড়াতে অতিরিক্ত রক্ষীও মোতায়েন এবং তাদের এক জোড়া করে বাড়তি চোখ। তাতে সুবিধা আছে, অসুবিধাও।
বছর তিনেক হল টানা কলার টিউন বাজছে এক বেসরকারি টেলিফোন সংস্থার দুই বাবু-বিবির। ভ্যালেন্টাইন দিনে ছুটি জোগাড় করেছিলেন কষ্ট করে। “রোজই আমরা এক সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাই। কিন্তু এই দিনটা যেন অন্য ব্যাপার”— অনুভব তাঁদের। কলেজ পড়ুয়া শ্রীবাস দেওঘরিয়া আর শ্রাবণী পতি কিন্তু পুরোপুরি সরস্বতীর টিমে— “ও সব কার্ড কোম্পানির ফক্কিবাজি, বুঝলেন! বেওসা বেওসা! আমাদের ‘অফিশিয়াল’ প্রেম দিবস এই সরস্বতী পুজো।”
তরজা বাড়িয়ে লাভ নেই। দু’টো দিনই তো গেল। উপরি পাওনা এই উইকএন্ডে তবে কী? সেই চেনা পার্ক? না কি শহর থেকে কিলোমিটার দশেক দূরে নাচন ড্যাম অথবা ২০ কিলোমিটার দূরে দেউল পার্ক। জঙ্গলভরা ভালকি মাচান আরও দূরে। ইতিমধ্যেই বাইকের পিছনে অনিন্দিতাকে বসিয়ে সেখানে ঢুঁ দিয়ে এসেছেন দুর্গাপুরের নিখিলেশ। এই জুটির কথায়, “সারা বছরই বিভিন্ন শপিং মল, রেস্তোরাঁ, পার্কে ঘুরে বেড়াই। স্পেশাল খুঁজতে চাইলে শহর ছাড়িয়ে যেতে হবে।” নির্জনতার খোঁজে নাচন ড্যামই তাঁদের কাছে সেরা গন্তব্য।
এত ছোটাছুটি যাঁরা করতে পারবেন না, তাঁরা হয়তো বেছে নেবেন ইস্পাতনগরীর চওড়া রাস্তা। গাছগাছালিতে ভরা, ইতিউতি দু’চার জন পথচারী। পিচরাস্তায় ছড়িয়ে থাকা ঝরা পাতার উপর দিয়ে হাঁটা। পাশের হাতে হাত। দুর্গাপুরের ‘এ’ জোনের কৌশিক মণ্ডল ও দীপিকা বসুর কথায় মেশে হাসি, “ইস্পাতনগরী পুরোটাই একটা বড় সাজানো-গোছানো পার্ক। বাইরে থেকে এসে সবাই তো তাই বলে যান!”
পথের ডাক রইল। মনের কোণে হিতোপদেশও। বসন্ত কাকে কোন দিকে টেনে নিয়ে যায়, কে জানে?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.