|
|
|
|
শিলিগুড়ি পুরসভা |
ভোটে সরলেন দলত্যাগী নান্টু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বামেদের আনা অনাস্থায় হেরে নিজের পদ থেকে অপসৃত হলেন শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার বিশেষ অধিবেশনে গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি হয়। পুরসভার মোট ৪৭টি আসনের মধ্যে একটি ফাঁকা। বাকি ৪৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ভোটাভুটিতে অংশ নেন ৪৪ জন। নান্টুবাবুর অপসারণের পক্ষে ভোট পড়ে ২৯টি। বিপক্ষে ১৫টি। পুরসভায় কংগ্রেসের মোট কাউন্সিলর ১৪, সিপিএমের ১৭ এবং তৃণমূলের ১৫ জন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “ভোটাভুটির ফল থেকে পরিষ্কার, কেবল তৃণমূল কাউন্সিলররাই নান্টুবাবুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে।”
এই পুরসভায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ক্ষমতায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই দিনের পরে দুই দলের মধ্যে দূরত্ব কী বাড়ল? গৌতমবাবু বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বকে পুরসভার বর্তমান পরিস্থিতি আমরা জানাব। তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের কথায়, “আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নই, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। নান্টুবাবু আমাদের দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি।” |
|
ভোটাভুটির পর নান্টু পাল। বিশ্বরূপ পালের তোলা ছবি। |
শিলিগুড়িতে গত পুরনির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট এক সঙ্গে লড়াই করেছিল। নান্টুবাবু তখন কংগ্রেসের টিকিটেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই সময়ে কংগ্রেস সিপিএমের সমর্থন নিয়ে গঙ্গোত্রী দত্তকে মেয়র নির্বাচন করে। তখন ডেপুটি মেয়র ছিলেন নান্টুবাবু। তৃণমূল সে সময়ে পুরবোর্ড থেকে সরে ছিল। এরপরে সিপিএমের সংস্রব থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস ২০১১ সালের মাঝামাঝি পুরবোর্ড তৈরি করে। সেই সময় থেকেই শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন নান্টুবাবু। মেয়র থেকে যান গঙ্গোত্রীদেবীই। এরপরে ২০১২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নান্টুবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। তার দু’দিন পরেই ছিল পুরবোর্ডের বৈঠক। সেখানে কংগ্রেস ও সিপিএম নান্টুবাবুর পদত্যাগ দাবি করে। তাদের দাবি ছিল, দলত্যাগের পরে নান্টুবাবুর আর চেয়ারম্যান পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। নান্টুবাবুর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে বিশেষ অধিবেশন ডাকতে আবেদন জানায় বামেরা। বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “তারপরেও চেয়ারম্যান কোনও
সভা ডাকেননি। তাই আমরা গত নভেম্বরে আদালতের দ্বারস্থ হই।” ১ ফেব্রুয়ারি আদালত নির্দেশ দেয় ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সভা ডাকার দিন ঘোষণা করতে। সেই মতো ৪ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়, বিশেষ অধিবেশনের হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এ দিনের জয়কে গণতন্ত্রের জয় বলে দাবি করেছেন মুন্সি নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “দলত্যাগের পরেও অনৈতিক ভাবে চেয়ারম্যান পদে ছিলেন নান্টুবাবু। এ দিন তা স্পষ্ট হল।” নান্টুবাবু অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, “যা বলার গৌতমবাবুই বলেছেন। আমি কোনও মন্তব্য করব না।” |
|
|
|
|
|