ঘাটতিই মাথাব্যথা
ভোট-বাক্স ভরতে কল্পতরু বাজেট চায় কংগ্রেসই
ঘুরে দাঁড়াতে কোমর কষার অর্থনীতি। উল্টো দিকে, ভোট-বাক্সের রাজনীতি। বাজেটের মুখে এই দু’য়ের তাল ঠোকাঠুকি ফের প্রকট কংগ্রেস নেতৃত্বের অন্দরে।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে যাওয়ার আগে এ বারই শেষ পুরোদস্তুর বাজেট পেশের সুযোগ পাবে মনমোহন সিংহের সরকার। কিন্তু চড়া ঘাটতির কথা মাথায় রেখে সেখানে কল্পতরু হতে চান না অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। যে কোনও মূল্যে রাজকোষ ঘাটতিকে ৫.৩ শতাংশে বেঁধে রাখতে চান তিনি। কিন্তু ভোটের মুখে ‘আম আদমি’র মন জয়ের জন্য তাঁর সেই যুক্তি মানতে নারাজ দলেরই শীর্ষ নেতৃত্বের এক বড় অংশ। জনমোহিনী বাজেটের পক্ষে সওয়াল করে তাঁদের যুক্তি, দল থাকলে (বা ভোটে জিতলে) তবে তো সরকার।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কংগ্রেসের অনেক নেতারই দাবি, ভোটের মুখে সাধারণ মানুষের আর্থিক সমস্যা সুরাহায় গুরুত্ব দিতে হবে বাজেটে। যেমন, ২ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করতে হবে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা। প্রথম ইউপিএ জমানার মতো কৃষকদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে। অর্থ বরাদ্দ করতে হবে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের সামাজিক সুরক্ষার জন্য নতুন প্রকল্পে।
একই সঙ্গে, ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের মতো অপ্রিয় সিদ্ধান্ত আপাতত শিকেয় তুলে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেক নেতাই। যেমন, ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা সিলিন্ডার সংখ্যা বছরে ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২টি করতে বলছেন তাঁরা। দাম কমানোর দাবি উঠেছে পেট্রোল, ডিজেলেরও।
এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, মনমোহন-সরকারের নেওয়া সংস্কারের অধিকাংশ সিদ্ধান্ত ‘গিলতে’ হয়েছে দলকে। তাই প্রকাশ্যে বিরোধিতা না করলেও, দলের বৈঠকে সেই ক্ষোভ সনিয়া-মনমোহনের সামনে উগরে দিয়েছেন তাঁরা। আম-আদমির কথা ভাবার দাবি তুলেছেন জয়পুরের চিন্তুন বৈঠকে। সেখানকার আর্থিক ঘোষণাপত্রে জোর দেওয়া হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা, কর্মসংস্থান, বৈষম্য দূর করার মতো প্রসঙ্গে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বৈঠকের শুরুতে চিদম্বরম বলেন, দেশ সঙ্কটে। ঘাটতি বাড়ছে। আগে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে মন্দা যুঝতে ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সামর্থ্য বর্তমান সরকারের নেই।
এর পরই জগদীশ টাইটলার বলেন, এই ব্যাখ্যা দল আর শুনতে চায় না। দল থাকলে তবেই তো সরকার। তাই ভোট মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাঁকে সমর্থন করেন অজিত যোগী, শাকিল অহমেদ, জীতেন্দ্র সিংহের মতো নেতারা। সাধারণ সম্পাদক দ্বিগ্বিজয় সিংহ বলেন, সংস্কার ও সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যে ভারসাম্য রেখেই চলতে হবে সরকারকে। দেখতে হবে, ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের মতো কঠোর সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব যেন সমাজের দুর্বল শ্রেণির ওপর না পড়ে।
শুধু দল নয়। এ নিয়ে সরকারের মধ্যে থেকেও চাপ তৈরি হচ্ছে চিদম্বরমের উপর। ঘাটতির কারণে এ বার বাজেটে গ্রামীণ রাস্তা ও কর্মসংস্থানের মতো কিছু প্রকল্পে বরাদ্দ ছাঁটাই করতে চান অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তাতে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। যিনি সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই এই বাজেটে দল ও সরকারের প্রবল চাপ সামলে অর্থমন্ত্রী কী ভাবে ঘাটতিতে রাশ টানেন, সে দিকেই চোখ রাখছেন সকলে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.