প্রেমের দুশমনদের এড়াতে রাঁচি শহর থেকে দূরে প্রেমিক-প্রেমিকারা
এই শহর থেকে,
আরও অনেক দূরে,
চলো কোথাও চলে যাই।

গানের এই কলিটাই ভালোবাসার দিন, ‘ভ্যালেন্টাইনস্ ডে’-তে সত্যি করে দিলেন রাঁচি শহরের তরুণ-তরুণীরা। শুধুই শহরের কোলাহল ছেড়ে নির্জনতায় একে অন্যকে কাছে পাওয়ার তাগিদে নয়, বরং ভালোবাসার দিনটিতে ‘পেয়ার কি দুশমন’-দের হাতে হেনস্থা হওয়া থেকে বাঁচতেই রাঁচির প্রেমিক-প্রেমিকারা অনেকেই কার্যত আজ শহর ছেড়ে পালালেন।
কেন? গত বছর এই ‘প্রেমের মিলন দিনে’ বিভিন্ন পার্কেই অল্পবয়সী তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক হেনস্থা করেছিল বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের লোকজন। পার্কে ঘুরতে আসা তরুণ-তরুণীদের মারধর, এমনকী রাস্তায় কান ধরে ওঠবোসও করানো হয়। জুবিলি পার্কে এক
তরুণ-তরুণীকে প্রকাশ্যে বলতে হয়েছিল, তাঁরা ভাইবোন।
এ বছর তাই আর এই দিনটিতে শহরের পার্কে বসে একান্তে সময় কাটানোর সাহস দেখাননি অনেকেই। ফলে শহরের সিংহ ভাগ পার্কই আজ খালি পড়ে রইল। ঝামেলা এড়াতে অনেক পার্কের দরজাই খোলা হল না। অথচ এদিন যাতে কোথাও তরুণ-তরুণীরা কোনও ভাবে হেনস্থার শিকার না হন তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিল রাঁচির পুলিশ। শহরের বিভিন্ন পার্কের বাইরে মোতায়ন করা হয়েছিল পুলিশ ও র্যাফ। কিন্তু পুলিশের কথায় ভরসা রাখতে পারেননি প্রেমিক-প্রেমিকারা। ফলে শহর থেকে দূরে---রামগড়, হাজারিবাগ, জোন্হা, দাসম ফলস কিংবা রাজরাপ্পার ছিন্নমস্তার মন্দিরের পথেই দলে দলে আউটিং করতে ছুটেছেন তাঁরা।
রাঁচি পুলিশ আগেই জানিয়েছিল যুগলদের নিরাপত্তার সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। শহরের বিভিন্ন পার্কের বাইরে পুলিশ মোতায়ন করা ছাড়াও, বিভিন্ন পার্কের আশপাশে পুলিশের গাড়িও টহল দেবে। মহিলা পুলিশ নিয়ে ‘শক্তি’ জিপও টহল দেবে পার্কের আশপাশে। যাতে গোলমাল হলেই তরুণ-তরুণীদের সাহায্যের জন্য তাঁরা এগিয়ে আসতে পারেন। রাঁচির পুলিশ সুপার বিপুল শুক্ল আজ সকালেও বলেন, “তরুণ-তরুণীরা নির্ভয়ে পার্কে আসুন। পুলিশ সব ধরনের সাহায্যের জন্য তৈরি আছে। যারা গত বছর গোলমাল করেছিল তারা এ বারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশও তৈরি। শুধু যাঁরা পার্কে আসবেন, তাঁরা দয়া করে কেউ কোনও আপত্তিকর পরিবেশ তৈরি করবেন না।” কিন্তু তরুণ-তরুণীদের কাছে বজরং দলের আতঙ্ক যে পুলিশের আশ্বাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে তার নজির মিলল জাকির হুসেন পার্ক, টেগোর হিল, রক গার্ডেন, জুবিলি পার্ক, সিধো-কান্হ পার্কগুলিতে।
সেখানে গিয়ে দেখা গেল, যাঁদের সাহায্যের জন্য পুলিশকর্মীরা রয়েছেন পার্কে, তাঁদেরই দেখা নেই। আর ঝঞ্ঝাট এড়াতে অনেক পার্কে আবার দরজাই খোলা হল না। গত বার ঝামেলার জের এসে পড়েছিল একেবারে রাজভবনের গায়ে, নক্ষত্র বন ও মছলি ঘর পার্ক দু’টিতে। ওই দু’টি পার্কের লোহার গেটেই আজ সকাল থেকে তালা ঝুলেছে। বন্ধ পার্কের বাইরে অবশ্য পুলিশ মোতায়ন ছিল। নক্ষত্র বনের জনৈক কর্মীর কথায়, “গত বছর গোলমাল হয়েছিল। বাইরে থেকে লোকজন ঢুকে পার্কের গাছ-ফুল নষ্ট করেছিল। সে কারণে আজ আর পার্ক খোলা হয়নি।’’
সকালেই হরমু বাইপাসে দেখা গেল গ্যাস বেলুন ওড়াতে ওড়াতে দু’টি বাইকে চড়ে চার তরুণ-তরুণী ওরমানজি চিড়িয়াখানার দিকে যাচ্ছেন। সেখান থেকে তাঁরা যাবেন জোন্হা ফলস। কৃষ্ণকান্ত নামে এক বাইক-আরোহী যুবকের কথায়, “সবাই সমান। গত বছর যারা ঝামেলা করেছিল এ বছর তাদের ঠেকাতে পুলিশ নেমেছে ঠিকই। কিন্তু পুলিশও হেনস্থা কম করে না! শহরের বাইরের জায়গাগুলোয় ঝুটঝামেলা কম।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.