ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তে... |
কয়েতবেল জায়ফলে দেবী |
|
সরস্বতী পুজোয় প্রতিবারের মতো এ বারও মণ্ডপ ভাবনায় নতুনত্ব আনছে কালনা শহরের জাপট এলাকার অগ্নিবীনা ক্লাব। টানা দু’মাসের চেষ্টায় হরিতকী, জায়ফল, জৈত্রি, কয়েত বেল, নারকেল, আমড়া-সহ ৩১ রকমের উপকরণ দিয়ে মণ্ডপ গড়ছে তারা। মণ্ডপে ঢোকার পথে রয়েছে বিশালকার রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের মূর্তি। আর মণ্ডপের ভেতরে রয়েছে নজরকাড়া নানা দেবদেবীর মডেল। প্রতিমাতেও রয়েছে নতুনত্ব। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী সুবীর পালের গড়া মূর্তিতে বাগদেবী দুই সখীর সঙ্গে নৃত্যরত। বুধবার পুজোর উদ্বোধন করেন ফুটবলের জাতীয় প্রাক্তন গোলরক্ষক হেমন্ত ডোরা।
|
হাসি ফুটছে অন্য মুখেও |
|
পুজোর আনন্দে প্রতিবন্ধীদেরও সামিল করল জাপট এলাকার ক্লাব যুগের দ্বীপ। ক্লাবের উদ্যোগে পুজোর আগেই বৃহস্পতিবার ট্রাইসাইকেল পেলেন এক প্রতিবন্ধী। উদ্যোক্তাদের দাবি, এতে পুজোর জৌলুসে কিছুটা ভাটা পড়লেও প্রতিবন্ধীদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে তারা খুশি। মণ্ডপের সামনে গম চাষ করে তা ছেঁটে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ক্লাবের নাম। ৫০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার এই মণ্ডপের গায়ে নানা পৌরাণিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
|
ছোটা ভীমের দেশে পাড়ি |
|
দশ নম্বর ওয়ার্ডের দিপালী সঙ্ঘের মণ্ডপ এ বার কচিকাচা স্পেশাল। খড়, চাটাই, থার্মোকল, ফিতে , বাঁশ ও নানা রং দিয়ে তৈরি হয়েছে গোলাকার এই মণ্ডপ। মণ্ডপের ভেতরটা ছোটা ভীমের রাজ্য ঢোলকপুরের আদলে সাজানো। সারি দিয়ে সাজানো রয়েছে ছোটা ভীমের নানা কীর্তিকলাপ। উদ্যোক্তাদের দাবি, কার্টুনের এই দেশে শিশুদের স্বাগত জানানো হবে চকোলেট দিয়ে।
|
উষ্ণায়ন রুখতে দাওয়াই |
|
নেতাজি সঙ্ঘের মণ্ডপ আবার সেজেছে আলোর সাজে। উষ্ণায়নের প্রভাবে পৃথিবীর কতটা ক্ষতি হচ্ছে, সেটাই হল থিম। এর সঙ্গে এই উষ্ণায়নের গ্রাস থেকে পৃথিবীকে কী ভাবে রক্ষা করা যাবে, তারও নিদান দেবে এই মণ্ডপ। পাশাপাশি, দর্শকেরা জলের নানা দৃশ্য দেখেও মুগ্ধ হবেন বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। মণ্ডপ তৈরি করছেন মেদিনীপুরের শিল্পীরা।
|
গুহায় পুরনো দিনের কথা |
|
১০৮ শিব মন্দির লাগোয়া স্ফুটনিক-৭০ এর এ বারের থিম গুহামানব। মণ্ডপের ভেতরের আলো আধাঁরিতে হাঁটলেই নজরে পড়বে নানা মডেলে ফুটিয়ে তোলা সভ্যতার বিবর্তনের কাহিনী। প্রায় ৩০ ফুট উঁচু মণ্ডপে ৫ ফুটের প্রতিমা তৈরি হয়েছে প্রয় ২৫০টা ঝামা ইট দিয়ে। তৈরি করেছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্থাপত্যশিল্পে স্নাতকোত্তর মৌমিতা মুখোপাধ্যায়।
|
আলোয়-শব্দে ভূতের বাংলো |
|
শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামলেন্দু স্পোর্টিং ক্লাবের থিম এ বার ভূতবাংলো। গুহার আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ভেতরে আলো ও শব্দের কারসাজির সঙ্গে ভূত সেজে থাকবেন পাঁচ জ্যান্ত মানুষও। ক্লাব কর্তাদের দাবি, ভেতরে ঢুকলে গা ছমছম করবেই। প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে প্রতিমা তৈরি হয়েছে। মণ্ডপ এবং প্রতিমার কাজ করেছেন বিরাটির শিল্পী বেনু দাস।
|
পাটকাঠি আর বাঁশের মণ্ডপ |
|
শহরের পাশাপাশি কালনার গ্রামগুলিতেও পুজো নিয়ে উন্মাদনা দেখার মতো। তার মধ্যে অন্যতম হাটকালনা পঞ্চায়েতের রামেশ্বরপুর যুবশক্তি ক্লাব। পুকুর পাড়ে মাথা তুলেছে প্রায় ৪০ ফুটের মণ্ডপ। বাইরেটি মূলি বাঁশের। আর ঝাড়বাতি থেকে ভিতরের অন্যান্য মণ্ডপসজ্জায় মূল উপকরণ পাটকাঠি। সন্ধ্যা নামতেই বাহারি আলোয় ফুটে উঠছে পালকির গান থেকে, রানার থেকে স্পাইডার ম্যানেরও নানা দৃশ্য। মণ্ডপের সামনে রাখা হয়েছে ফুলের গাছ। শুক্রবার পুজো উদ্বোধন করবেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
|
থাইল্যান্ডের নাগেশ্বরী |
|
সরস্বতী পুজোয় দেশ বিদেশের বিভিন্ন মন্দিরের আদলে নিজেদের মণ্ডপ তৈরির জন্য সুনাম রয়েছে তালকোনা সপ্তর্ষি সঙ্ঘের। এ বার ৩০ বছরে পা দিল পুজো। এ বারের ‘থিম’ থাইল্যান্ডের নাগেশ্বরী মন্দির। মণ্ডপের উচ্চতা ৫০ ফুটেরও বেশি। ভিতরে বাইরে ফাইবারের কাজ। প্রতিমা তৈরি হয়েছে পাট ও রেশম দিয়ে। শিল্পী কালনার অমর পাল।
|
ওই আসছে গোপালভাঁড় |
একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এ বার ধুমধামের সঙ্গে হবে রামেশ্বরপুর মর্ডান ক্লাবের পুজো। কাপড়ের মণ্ডপটি অনেকটা আদিবাসী পরিবারের বাড়ির আদলে তৈরি। রাস্তার দু’পাশে আলোকসজ্জায় পশুপাখি থেকে কার্টুনের ছোটা ভীম, গোপালভাঁড়-সহ নানা মজার দৃশ্য।
|
অ্যাকুয়ারিয়ামে শ্যাওলা সরস্বতী |
|
শহরের শ্যামরাইপাড়ার সূর্য সমিতির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ শ্যাওলা দিয়ে তৈরি প্রতিমা। অ্যাকুয়ারিয়ামের ভিতর রাখা হয়েছে মূর্তিটি। তার চারপাশে খেলে বেড়াচ্ছে রঙিন মাছ। তার সঙ্গে আলো ও শব্দ দিয়ে মণ্ডপের ভিতর তৈরি করা হয়েছে ঝড়ের পরিবেশ। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে মাদুরকাঠি, তুলো, কাঠের গুড়ো ও রঙীন কাপড়।
|
তথ্য: কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |
|