সীমান্তে ফের গুলি, মৃত্যু পাচারকারীর
ত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের পর কোচবিহারের তুফানগঞ্জ সীমান্তে। বুধবার ভোরে তুফানগঞ্জ থানার সীমান্ত এলাকা কৃষ্ণপুরের চেংমারিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হল। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শাহিদ আলি (২০)। বাড়ি চেংমারি এলাকাতেই। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, জওয়ানদের সঙ্গে পাচারকারীদের সংঘর্ষে এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ওই এলাকা। তাদের দাবি, এ দিন ভোরে গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় গোলমাল বাঁধে। মৃতের পরিবারের অবশ্য অভিযোগ, শাহিদ জমিতে কাজ করতে ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।
কোাচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল অবশ্য বলেন, “বিএসএফ এবং মৃতের পরিবার দুই পক্ষই অভিযোগ জমা দিয়েছে। ঘটনায় এক জওয়ান জখম হন বলে জানানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিএসএফের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” বিএসএফের দাবি, মৃত যুবক সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বেই জওয়ানদের ওপর হামলা হয়। বিএসএফের কোচবিহার সেক্টরের ডিআইজি অশোক কুমার বলেন, “গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় পাচারকারীরা জওয়ানদের ওপর চড়াও হয়। তাতে এক জওয়ান জখম হন। তাকে পাচারকারীরা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আত্মরক্ষায় এক জওয়ান গুলি চালান।”
বিএসএফের অভিযোগ, এ দিন ভোরে একদল পাচারকারী নদী পেরিয়ে গরু পাচারের ছক কষে। পাচারকারী দলের সদস্যদের দেখে টহলদারির দায়িত্বে থাকা দুই জওয়ান বাধা দেন। সেই সময় পাচারকারী দলের ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এক কনস্টেবলকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পর পাচারকারীরা তাকে গ্রামের দিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে আত্মরক্ষার জন্য ঘটনাস্থলে থাকা অন্য জওয়ান গুলি চালান। দিনের আলো ফুটলে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায় মৃতের বাঁদিকের কাঁধের নীচে ওই গুলি লাগলে সে লুটিয়ে পড়ে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তার জেরেই ঘটনাস্থলেই ওই যুবক মারা গিয়েছে। বিএসএফের যে কনস্টেবল জখম হয়েছেন তাঁর নাম রঞ্জিত সিংহ। বিএসএফ জানিয়েছে, তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ওই জওয়ানের চিকিৎসা চলছে।
সোমবার উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে বিজিবি’র গুলিতে এক ভারতীয় কৃষকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার রেশ না-কাটতেই এদিন ফের সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ডিআইজি অশোক কুমার, এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রমুখ ঘটনাস্থলে যান। বিএসএফের এক কর্তা বলেন, গুলি চালনার আগে জওয়ানরা শূন্যে গুলি করে সতর্ক করার চেষ্টাও করেছিল। নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মনে করেন পুলিশি তদন্ত হলেই আসল ঘটনা জানা যাবে। দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান গোবিন্দ রায় জানান, পাচারকারী এবং জওয়ানদের সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলেই তিনি শুনেছেন।
এনিয়ে গত সাড়ে ৩ মাসে কোচবিহারের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শীতলখুচি থানার পুটিয়া বারমাসিয়া এলাকায় ইমতিয়াজ আলি এবং আলি আহমেদ নামে তার খুড়তুতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়। ২৫ নভেম্বর মেখলিগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশের বাসিন্দা এক অনুপ্রবেশকারী আব্দুল লতিফ মারা যান। ২৯ নভেম্বর শীতলখুচি থানার লালবাজার এলাকায় মারা যান মফিজুল মিঁয়া নামে এক যুবক। গত নভেম্বরে বিএসএফ এবং পাচারকারীদের মধ্যে চ্যাংরাবান্ধাতেও সংঘর্ষে গুলি চলে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.