২০ ও ২৪ এপ্রিল ভোটের প্রস্তাব
দৃঢ় কমিশন, নরম হল রাজ্যই
ঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কমিশনের সঙ্গে সংঘাত ছেড়ে অবশেষে সমঝোতার পথে মহাকরণ। গত চার মাসের অবস্থানের উল্টো পথে হেঁটে বুধবার মহাকরণে পঞ্চায়েত দফতর জানিয়ে দিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার যেমন চাইবেন, ভোট হবে সে ভাবেই। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের ভূমিকা কেবল সহযোগীর। কমিশন তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকাতেই সরকারকে শেষ পর্যন্ত পিছু হঠতে হল।
মঙ্গলবারই পঞ্চায়েত সচিব সৌরভ দাস কমিশনে চিঠি দিয়ে দু’দফায় ভোট করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ২০ এবং ২৪ এপ্রিল ওই ভোট করাতে চায় সরকার। কমিশন অবশ্য আসন পুনর্বিন্যাস ও সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার ব্যাপারে এ দিন ব্যস্ত ছিল। আজ, বৃহস্পতিবার তা প্রকাশিত হওয়ার পরেই সরকারের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু করবে কমিশন।
এ দিন মহাকরণে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ভোট পরিচালনা করবেন। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শেষ করার জন্য তিনি যা চাইবেন, তা-ই করতে পারেন। আমরা তাঁকে পূর্ণ সহযোগিতা করব।” কিন্তু অনেকেই তো বলবেন, আপনারা পিছু হঠলেন? সুব্রতবাবুর ব্যাখ্যা, “তা কেন, আমরা তো কখনও জেদাজেদি করিনি। কমিশনের সচিব পদে যাঁকে পাঠানো হয়েছিল, তাঁকে উনি নিতে চাননি। আমরা তো জোর করিনি। ব্যাখ্যা যে কেউ যা খুশি করতে পারে। রাজ্যে অবাধ পঞ্চায়েত ভোটের স্বার্থে যা করা উচিত, তা-ই করা হচ্ছে। সংঘাত নয়, আমাদের পথ সহযোগিতার পথ।”
তবে একই সঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনকে পঞ্চায়েত আইনে যা রয়েছে, তা মেনেই চলতে হবে। আগে হয়েছে বা এমনটাই বরাবর হয়ে এসেছে বলে কোনও কিছু এ বারও করতে হবে, এমন নয়। ব্যাখ্যা দিয়ে সুব্রতবাবু জানান, “এত দিন শুনছিলাম প্রথম ভোট গ্রহণের দিন থেকে অন্তত ৪৫ দিন আগে মনোনয়নের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়। পঞ্চায়েত আইন কিন্তু তা বলছে না। সেখানে মনোনয়নের জন্য ২১ দিন সময় পেলেও চলে। নাম প্রত্যাহার, স্ক্রুটিনি এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার জন্য আরও দিন সাতেক লাগতে পারে। পঞ্চায়েত ভোটে নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়েও নির্দিষ্ট কিছু বলা নেই।” কমিশন এ সব মাথায় রাখবে বলে মনে করেন সুব্রতবাবু।
দিন দুয়েক আগেও এক দফাতেই ভোট করানোর ব্যাপারে জেদ ধরে ছিল রাজ্য। গত সোমবার পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের দুই কর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে পঞ্চায়েত ভোটের পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। এক দিনে ভোট ধরেই আলোচনা হয়েছে। মহাকরণের খবর, কমিশন ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তিন দফায় ভোট চেয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ের কাছে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ এবং পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে মতামত চেয়েছিলেন। ডিজি সরকারকে জানিয়েছেন, এক দফায় ভোট করাই শ্রেয়। ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল এক দফায়, ২০০৮-এ তিন দফায়। তিন দফায় ভোট হওয়ায় গত বার হিংসাত্মক ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি হয়েছিল। এক দিনে ভোট হলে সামগ্রিক বিচারে ক্ষয়ক্ষতি হবে কম।
তাঁর আরও সুপারিশ, একাধিক দফায় ভোট হলে দুষ্কৃতীরা নানা স্থানে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাবে। ফলে গোলমালের আশঙ্কাও বেড়ে যাবে। ভোটের দিন প্রতি বুথে না হলেও প্রতি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানো যেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ডিজি-র নোটে আপত্তি করেননি মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে পঞ্চায়েত দফতরকে বলা হয়, জেদাজেদি ছেড়ে সরকার কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখাক। তার পরেই দু’দফায় ভোটের প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.