প্রথমে বল হাতে ৪-৩৮, পরে অপরাজিত ১০৬। গত বছর বিজয় হাজারে ট্রফি এ ভাবেই শেষ করেছিলেন তিনি। ফাইনালে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তাঁর বিক্রমেই সে বার দেশের সেরা ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বাংলার। গত বারের নায়ক সেই লক্ষ্মীরতন শুক্লই এ বার অধিনায়ক। তাই বাংলার ক্রিকেটমহলের নজর তাঁর দিকেই। কিন্তু লক্ষ্মী তাকিয়ে রয়েছেন তাঁর দলের দিকে।
বৃহস্পতিবার বিজয় হাজারের প্রথম ম্যাচে ওড়িশার বিরুদ্ধে নামার আগে বাংলার অধিনায়ক বলছিলেন, “আমি পুরো দলটার দিকেই তাকিয়ে আছি। পুরো দল ভাল না খেললে আমাদের পক্ষে গত বারের মতো ভাল ফল করা সম্ভব নয়।” গত বছর ফাইনালে তাঁর পারফরম্যান্সের কথা মনে করিয়ে দিতে বললেন, “ওটা এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ঠিকই। কিন্তু অতীতকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকলে চলে না। আমিই সব ম্যাচে ভাল খেলে দলকে জেতাব, তা তো বাস্তবসম্মত নয়। ভাল খেলতে হবে সবাইকেই।”
বাংলার কোচ ডব্লিউ ভি রামনও চান, গত বারের চ্যাম্পিয়নের তকমাটা মাঠের বাইরে রেখেই খেলতে নামুক তাঁর দলের ছেলেরা। বললেন, “ওটা মনে রাখলে চাপ বাড়বে। তাতে ক্ষতিই হবে বেশি। সোজা কথাটা হল, সিনিয়রদের দায়িত্ব নিতে হবে আর জুনিয়রদের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।” |
‘প্রথম গোলাপ’
‘এই ব্যাট দিয়েই হয়ে যাক সেঞ্চুরি।’ বাংলা দলের অনুশীলনে
মনোজ তিওয়ারিকে কি এই কথাই বলছেন অশোক দিন্দা? ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
নিজের দল নিয়ে অবশ্য যথেষ্ট আশাবাদী ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী। দল নিয়ে দু’দিন ধরে নেট প্র্যাক্টিসের পর বললেন, “ছেলেরা বেশ ভাল ফর্মে রয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা সেরা দল হওয়া উচিত, সেটাই পেয়েছি। প্রত্যেকেই ম্যাচের মধ্যে রয়েছে। তাই আশা করি আমরা ভাল খেলব।” কিন্তু এই দল থেকে যখন মনোজ তিওয়ারি, মহম্মদ সামি, অশোক দিন্দারা বেরিয়ে যাবেন জাতীয় কর্তব্য পালন করতে, তখনই এই বাংলার আসল চ্যালেঞ্জ। তা মেনেও নিলেন লক্ষ্মী। তবে তাঁর বিশ্বাস, সেই অবস্থাও সামলে নেবেন তাঁরা।
রঞ্জিতে ওপেনিং জুটি নিয়ে যে সমস্যা ছিল বাংলার, ওয়ান ডে-তে সেই সমস্যা শুরু থেকেই মেটানোর লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই সৌরাশিস লাহিড়ি ও অরিন্দম দাসরা ওপেন করবেন। এর আগেও বাংলার হয়ে ওপেন করতে নামা সৌরাশিস বহু দিন পর বাংলার হয়ে মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে বেশ উত্তেজিত। রঞ্জি ট্রফির দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তাই বিজয় হাজারে তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জ। বললেন, “কত দিন পর বাংলার নেটে প্র্যাক্টিস করলাম। দারুণ লাগল। এ বার ম্যাচেও ভাল পারফর্ম করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।” সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠের উইকেটও যথেষ্ট ভাল, জানালেন লক্ষ্মী, সৌরাশিসরা।
উইকেটের প্রশংসা করলেন ওড়িশার কোচ ও ভারতীয় দলের প্রাক্তন পেস বোলার দেবাশিস মোহান্তিও। তারকাহীন দল, তবু লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামবেন তাঁর দলের ছেলেরা, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন দেবাশিস। |