|
|
|
|
কাল সরস্বতী পুজো |
আবেগ কমছে নয়া প্রজন্মের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
পুজো হচ্ছে। কিন্তু যাঁদের জন্য পুজো সেই কচিকাঁচা পড়ুয়াদেরই ভাঁটা প্রবাসের সরস্বতী পুজোয়। নিয়ম রক্ষা করতে অবশ্য বাড়িতে পুজো হচ্ছে অনেক জায়গাতেই। কিন্তু পুজোর ‘সর্বজনীন’ চিত্রটা তেমন ভাবে প্রকট নয় অনেক জায়গাতেই।
ঝাড়খণ্ডের প্রবাসী বাঙালিদের একটা বড় অংশ থাকেন জামশেদপুরে। কিন্তু সেখানে কার্যত দূরবিন দিয়ে খুঁজতে হবে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ। কচিকাঁচারা তো দূর অস্ত। বরং বাঙালিদের পুজোরও দায়িত্ব বর্তেছে অবাঙালিদের হাতে। জামশেদপুরের নিউ কেবল টাউনে পঞ্চাশ বছর আগে কেবল বয়েজ ক্লাব গড়েছিলেন বাঙালিরা। এ বার তাঁদের পঞ্চাশ বছর হচ্ছে ক্লাব এবং সরস্বতী পুজোর। কিন্তু পুজো পরিচালনার ভার এখন সেখানকার অবাঙালি বাসিন্দাদের হাতেই। এক পুজো উদ্যোক্তা রাজেশ সিংহবামের কথায়, “এক সময় কেবল সংস্থার বাঙালি কর্মীরা এই পুজোর প্রচলন করেন। কিন্তু এখন পুজো আমরাই করছি। আগে ছোটরাই এই পুজো করত। কিন্তু এখন তরুণ সদস্য কম থাকায় আমাদেরই এগিয়ে আসতে হয়েছে।”
|
 |
জামশেদপুরে সরস্বতী পুজোর একটি মণ্ডপ। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী |
সমস্যার কথা মানছে জামশেদপুরের বেঙ্গলি ক্লাবও। সেখানে সরস্বতী পুজো হচ্ছে। কিন্তু সামনের সারিতে এগিয়ে আসতে হচ্ছে প্রবীণ সদস্যদেরই। ক্লাবের সহ-সচিব অচিন দে র কথায়, “জামশেদপুর ধীরে ধীরে বৃদ্ধাশ্রমে পরিণত হচ্ছে। পুরনো বাঙালি পরিবারের ছেলে মেয়েরা অধিকাংশই লেখাপড়া কিংবা চাকরির সুবাদে শহরের বাইরে। বাঙালি পরিবারগুলিও পেশার তাগিদে শহর ছাড়ছে। ফলে নতুন প্রজন্মকে পুজোয় যুক্ত হতে খুব কম দেখা যাচ্ছে। তাই সর্বজনীন পুজোর চলও কমেছে।” তবুও বেঙ্গলি ক্লাব, সবুজ সংঘের মতো ক্লাবগুলি সরস্বতী পুজোর ঐতিহ্য খানিকটা হলেও এ পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছে।
এরই মধ্যে খানিকটা হলেও ব্যতিক্রমী ছবি অবশ্য সাঁওতাল পরগনার দিকে। দুমকা, সাহেবগঞ্জ, জামতারার মতো জেলাগুলিতে অবশ্য সর্বজনীন পুজোর সংখ্যা বেশ ভালোই। তবে এখানেও তরুণ প্রজন্ম পুজোর সঙ্গে তেমনভাবে যুক্ত নয়।
দুমকার আমজোড়া মিলন সংঘের সদস্য গোপীনাথ কর্মকারের কথায়, “আমাদের ছোটবেলায় পুজো ঘিরেই সব উন্মাদনা ছিল। কিন্তু এখন ছেলেমেয়েদের কাছে পুজোয় হৈ চৈ করাটাই আসল। ফলে প্রবীণ সদস্যরা ছাড়া পুজো করা সম্ভব হচ্ছে না।”
জামতাড়ার কুণ্ডহিত জনকল্যাণ সমিতির পুজোতেও প্রবীণ সদস্যরাই পুজো করছেন। ক্লাবের সম্পাদক রাজু রায় বলেন,“ আমরা বিশ্বাস করতাম স্বরস্বতী বিদ্যার দেবী। কিন্তু এখনকার প্রজন্মের সেই বিশ্বাসটাই নেই। তা ছাড়া জিনিসপত্রে দাম যে ভাবে বেড়েছে ছোটোদের পক্ষে চাঁদা তুলে পুজো করা কঠিন। ফলে ছোটদের মধ্যে উৎসাহ কমছে।”
এ সবের মধ্যে অবশ্য ইতিবাচক চিত্র দেখা গিয়েছে রাঁচিতে। সরস্বতী পুজোকে ঘিরে সেখানকার বাঙালি পরিবারগুলি কয়েক দিন ধরেই মেতে উঠেছে। পুজোকে ঘিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে অনেক জায়গাতেই। |
|
|
 |
|
|