|
|
|
|
সরস্বতী পুজোয় সরকারি পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা |
সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে সরকারি পুরস্কারকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল কালনায়। গ্রামগুলির অধিকাংশেরই দাবি, উৎসাহ দিতে সরকারি বিচারকেরা বেশিরভাগ সময়েই পৌঁছন না তাঁদের এলাকায়।
গত বছর থেকে কালনার সরস্বতী পুজোকে উৎসাহ দিতে এগিয়ে এসেছে রাজ্য পর্যটন দফতর। এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। মূলত তাঁর তত্ত্বাবধানেই তৈরি হয় বিচারকদের তালিকা। গত বছর এই তালিকায় ছিলেন ১৭ জন। এইবার সেখানে ২৩ জন রয়েছেন। বুধবার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বিচারক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়, প্রশাসনের তরফে একটি তালিকা তৈরি করে বিচারকদের হাতে দেওয়া হবে। মণ্ডপ, আলোকসজ্জা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিচারকেরা সেখানে নম্বর দেবেন। |
কালনার একটি মণ্ডপে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
কালনার মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি জানান, যে সব ক্লাব সরকারি নিয়ম মেনে পুজোর অনুমতি নিয়েছেন, সেখানেই যাবে ওই বিচারক দল। এই তালিকায় যে ক্লাবগুলির নাম রয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই বাজেট গ্রামগুলির পুজোর বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু সরকার যেখানে কালনার সরস্বতী পুজোকে উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসছে, সেখানে সরকারি প্রতিনিধি দল গ্রামে পৌঁছচ্ছে না কেন? মহকুমাশাসকের বক্তব্য, “মাত্র গত বছর থেকে সরকারি পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে পরে ভাবনাচিন্তা করা হবে।
প্রশ্ন উঠছে, সরকারি ভাবে কালনার গ্রামের পুজোগুলিকে উৎসাহ দেওয়াই যদি সরকারের লক্ষ্য হয়, তবে গ্রামের বেশিরভাগ ক্লাবের পুজোকে কেন এই তালিকার বাইরে রাখা হবে? তেহাট্টা, বাজিতপুর, বাঘনাপাড়া, ধাত্রীগ্রামের মতো গ্রামগুলি, যেখানে ধুমধাম করে পুজো হয় সেখানকার উদ্যোক্তাদের আক্ষেপ, পুজোর বাজেট কম থাকার কারণে বেশিরভাগ গ্রামের ক্লাবের পক্ষেই মোটা টাকা খরচ করে সরকারি অনুমতি নেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু তারাও খুব সুন্দর করে পুজো করেন। গ্রামের বহু শিল্পীই পুজোর মাসখানেক আগে থেকে নিজেদের উজাড় করে কাজ করতে শুরু করে দেন। তৃণমূলের কালনা ১ ব্লকের সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহ রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গ্রামকে নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। সেক্ষেত্রে সরকারি পুরস্কার শুধু শহরে সীমাবদ্ধ থাকবে, তা ঠিক নয়। গ্রামের পুজোগুলিকে ওই তালিকায় ঢোকানো হলেও সার্বিকভাবে কালনা মহকুমারই জৌলুস বাড়বে।” কালনা ১ ব্লকের হাটকালনা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বাপ্পা মজুমদারের কথায়, “শহরের বড় বাজেটের সঙ্গে গ্রামের পুজোগুলি পাল্লা দিতে পারবে না। কিন্তু জনপ্রিয়তায় গ্রামের পুজো শহরের পুজোকে পাল্লা দিতে পারে। তাই গ্রামের পুজোগুলিকে আলাদা করে বিচার করা উচিত।”
কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু জানান, শহরের পাশাপাশি আগের বারের মতো এ বারও নিভূজিবাজার-সহ গ্রামের বেশ কিছু পুজোর মূল্যায়ণ করবেন বিচারকেরা। পরের বছর গ্রামের পুজোগুলি নিয়েও ভাবা হবে। তাঁর কথায়, “আসলে এই বিষয়টা আগে কেউ ভাবেনি।” |
|
|
|
|
|