তৃণমূলে ঘেঁষায় ফের সদস্য ছাঁটল সিপিএম
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র প্রতি আনুগত্য দেখানো ৪৮ জনের সদস্যপদ খারিজ করেছে সিপিএম। সকলেই দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) ঠিকাশ্রমিক। এর মধ্যে ডিওয়াইএফ-এর এক জোনাল সভাপতি যেমন রয়েছেন, আছেন সিপিএমের এক শাখা সম্পাদকও। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও উপদলীয় কার্যকলাপের অভিযোগও রয়েছে এই বহিষ্কৃত সদস্যদের বিরুদ্ধে।
গত লোকসভা নির্বাচনে জনসমর্থন হারাতে শুরু করা ইস্তক শুদ্ধকরণে মন দিয়েছিল সিপিএম। বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে তার গতি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেই এক লপ্তে অন্তত তিন হাজার কর্মীর দলীয় সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল নিস্ক্রিয়তা, দলীয় অনুশাসন না মেনে চলা ইত্যাদি।
ইদানীং এক শ্রেণির পার্টিকর্মীর বিরুদ্ধে স্বার্থসিদ্ধির জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলার অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। জেলার তেমন ১৭ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু দুর্গাপুরে পুরভোটের ফল বেরোলে দেখা যায়, সংশোধন প্রক্রিয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছেন আরও অনেকে।
সিপিএম সূত্রের খবর, পুরভোটের ফলাফল কাঁটাছেড়া করতে গিয়ে দলীয় নেতৃত্ব দেখেন, বেনাচিতি এলাকায় ফল অপ্রত্যাশিত ভাবে খারাপ হয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্ব ‘সঠিক ভূমিকা’ পালন করেননি। তাই দলীয় কর্মী-সমর্থকরা নিষ্ক্রিয় থেকে গিয়েছেন। উল্টে বিরোধী দল তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে গিয়েছেন নেতৃত্বের একাংশ। দলের নির্বাচনী রণনীতির অনেক তথ্যই চলে গিয়েছে তৃণমূলের হাতে। বেনাচিতির ৬টি ওয়ার্ডেই বাম প্রার্থীরা হেরেছেন বড় ব্যবধানে। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ তুলে ধরে কার্যত কোনও ‘প্রতিরোধ’ই গড়ে তোলা হয়নি ওয়ার্ডগুলিতে। ফলে সাধারণ সমর্থকেরা বুথমুখো হওয়ার সাহস পাননি।
দলের গত জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেও সদস্যদের দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, আকস্মিক জীবনমানের পরিবর্তন, অসামাজিক ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা ইত্যাদি নানা ত্রুটির কথা স্বীকার করা হয়েছিল। জেলাস্তরের এক নেতা জানিয়েছেন, সাধারণ চাকরি বা কাজকর্ম করেও যে ভাবে এক শ্রেণির দলীয় কর্মী ফুলে-ফেঁপে উঠেছেন, তা মেনে নিতে পারেননি এলাকার মানুষ। যার ফল পড়েছে একের পর এক ভোটবাক্সে। গত বছর জুলাইয়ে পুরভোটের পরেই দলের বেনাচিতি লোকাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিবেকানন্দ হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বিনয় মণ্ডলকে। এ বার ফের খাঁড়া নামল।
৪৮ জনের বহিষ্কার প্রসঙ্গে সিপিএমের দুর্গাপুর (পূর্ব) জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা ডিপিএলের সিটু নেতা নরেন সিকদারের দাবি, “ওঁরা জানিয়েছেন, চাকরি বাঁচাতে ভয়ে তৃণমূলের আশ্রয় নিয়েছেন। এক সঙ্গে তো আর দু’টি রাজনৈতিক দলে থাকা যায় না। সেই জন্যই ওদের ছাঁটাই করা হয়েছে।” দলের জেলা স্তরের এক নেতা জানান, ওই সদস্যদের বেশ কয়েক বার সতর্ক করা হয়েছিল। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দু’টি বৈঠকে তাঁদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পরে ফের বেশ কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তার মধ্যে এক জোনাল সদস্যও রয়েছেন। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত বহিষ্কৃতদের বক্তব্য জানা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.