ভারতের টেস্ট টিম থেকে গৌতম গম্ভীরকে বাদ দেওয়া নিয়ে যখন দেশজুড়ে আলোচনা, তখন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মনে হচ্ছে জাতীয় নির্বাচকরা ভুল কিছু করেননি। সোমবার সিএবি-তে এসে সৌরভ বলে দিলেন, “গম্ভীর রানই পাচ্ছিল না। আর রান না পেলে বাদ তো পড়বেই।” কিন্তু গম্ভীর না থাকায় ভারতের ওপেনিং কিছুটা অনভিজ্ঞ হয়ে পড়ল না? দিল্লি ওপেনারের বদলি হিসেবে যিনি এলেন, সেই শিখর ধওয়ান কতটা কার্যকর হবেন? যা শুনে সৌরভের উত্তর, “সামনে আরও কঠিন সিরিজে নামতে হবে ধোনিদের। যা দেখার, অস্ট্রেলিয়া সিরিজেই দেখে নিতে হবে। আমি তো বলব, জুনিয়ররা এই সিরিজকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করুক।” আর গম্ভীরের জন্য তাঁর কী পরামর্শ? “ক্রিকেটটা রকেট সায়েন্স নয়। গম্ভীরকে রান করে ফিরতে হবে।”
পাশাপাশি ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক মনে করছেন, অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ড ভারতকে যতই ভারতের মাটিতে এসে হারিয়ে যাক, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে কাজটা অত সোজা হবে না। বলছিলেন, “ইংল্যান্ডের স্পিন বোলিংটা অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ভাল। মন্টি-সোয়ান জুটি লিয়ঁ-ডোহার্টির চেয়ে অনেক ভাল বলেই মনে করি। তবে অস্ট্রেলিয়ার পেস অ্যাটাক আবার ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। আর ভারতকে ভারতের মাটিতে হারানো এখনও কঠিন।” যাঁর মনে হচ্ছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াদু’টো টিমই ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। “যারা স্পিন ভাল খেলবে, সিরিজটা তারাই জিতবে।”
এবং আসন্ন সিরিজে হরভজন সিংহ ফিরে আসায় টিমের যে আদতে লাভই হবে, সেটাও বলে দিচ্ছেন সৌরভ। “ওর প্রত্যাবর্তন ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে খুবই ভাল খবর। দুর্দান্ত বোলার। অভিজ্ঞও।” একই সঙ্গে টেস্ট টিমে ডাক পাওয়া বাংলা পেসার অশোক দিন্দাকেও পরামর্শ দিয়ে রাখলেন। বলে দিলেন, “দিন্দা অনেক দিন ধরে আছে জাতীয় দলের সঙ্গে। একটাই কথা ওকে বলার আছে। তোমাকে নিখুঁত বোলিং করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটা দরকার।” আর সচিন? ইরানিতে যিনি দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে রাখলেন? এ বার সৌরভের উত্তর, “ইরানির সেঞ্চুরি ঠিক আছে। কিন্তু আমি চাই সচিন ওর যাবতীয় বারুদ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ুক। ওর জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।”
এ দিন সিএবি-র ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন সৌরভ। কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেট নিয়ে তাঁর প্রস্তাব আশ্চর্যজনক ভাবে আপাতত খারিজ হয়ে গেল। সৌরভের পরামর্শে গত বছর থেকে লিগের ফর্ম্যাট পাল্টে ফেলা হয়েছিল। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব থেকে ম্যাচ দু’দিনের বদলে তিন দিনের করে দেওয়া হয়। সৌরভের যুক্তি ছিল, স্থানীয় ক্রিকেটে তিন দিনের ম্যাচের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে, রঞ্জি ট্রফিতে চার দিন খেলতে অসুবিধা হবে না। ক্রিকেটারদেরও তাতে উন্নতি ঘটবে। কিন্তু সোমবারের বৈঠকে পুরনো সেই ফর্ম্যাটেই ফিরে গেল সিএবি।
কর্তাদের কেউ কেউ বলছেন বেশ কিছু ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব যখন শুরু হবে, তখন অসহ্য গরম পড়ে যাবে। ক্রিকেটাররা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই ম্যাচ তিন দিনের চেয়ে দু’দিনের করাই ভাল। সৌরভ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক নিয়ে একটাও কথা বলতে চাননি। বলেছেন, “যা বলার সিএবি প্রেসিডেন্ট বলবেন।” তবে পরে সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলে দিলেন, “একাংশের চাপে আপাতত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তবে আগামী মরসুমের আগে সৌরভের সঙ্গে বসেই সমস্ত কিছু ঠিক করা হবে।”
|