|
|
|
|
সরব কংগ্রেস |
অর্থ আত্মসাতের নালিশ, চাপে পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য পুরসভার স্ট্যাম্প ও রসিদ জাল করার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। সরকারি অর্থ আত্মসাতের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত তেমন পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ ঘিরেই চাপের মুখে পড়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। আগে তৃণমূল নেতৃত্ব পুর-কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এ বার দ্বারস্থ হল কংগ্রেসও।
সোমবার দুপুরে কংগ্রেস নেতৃত্ব পুরপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন। নেতৃত্বে ছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেস কমিটির সভাপতি পার্থ বসু। তাঁদের দাবি দু’টি। এক, দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা, দুই, প্রতারিতদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে তাঁদের ফের বৈধ জলের সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা। মেদিনীপুর পুরসভা কংগ্রেস- তৃণমূলের দখলে। পুরপ্রধান পদে রয়েছেন তৃণমূলের প্রণব বসু। উপ-পুরপ্রধান পদে কংগ্রেসের এরশাদ আলি। অবৈধভাবে জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য দু’জনেরই সই জাল করা হয়েছে। তবে, দু’জনের কেউই এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত কোনও অভিযোগ জানাননি। পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের এই অবস্থান ঘিরে দুই দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, “অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” যে ওয়ার্ডের কংগ্রেস নেতৃত্ব সোমবার পুর-কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, সেই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডেই পুরসভার স্ট্যাম্প ও রসিদ জাল করে অবৈধভাবে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, অবৈধ ভাবে জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য এক ঠিকাদারকে ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। দু’টি বাড়ির জলের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুরসভার অনুমান, একটি কোনও দুষ্টচক্রের কাজ। তবে এই চক্রের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা প্রকাশ্যে আনতে পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেই অভিযোগ। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। এখনও পর্যন্ত পুরসভার কাছে অবৈধভাবে জলের সংযোগ দেওয়ার যে সব অভিযোগ এসেছে, তার সবই ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। ২০০৩ সালের নির্বাচনে এই ওয়ার্ড থেকে জেতেন সুভাষময় ঘোষ। ২০০৮ সালে ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হয়। জেতেন তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবী। কংগ্রেস-তৃণমূল দু’পক্ষই এই কাণ্ডের জন্য সুভাষময়বাবু এবং নির্দল কাউন্সিলর কৃষ্ণাদেবীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সুভাষময়বাবু অবশ্য জানাচ্ছেন, “তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে কাউন্সিলর পদত্যাগ করবেন।” সোমবার তিনি বলেন, “জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ তো কাউন্সিলর করেন না। করে পুরসভা। শুধু ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কেন? অনান্য ওয়ার্ডকেও তদন্তের আওতায় আনা হোক।” পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, শহরের অনান্য ওয়ার্ডকে তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে না। কেন? পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “যে অভিযোগ এসেছে, তার সবই ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। তাই ওই ওয়ার্ড নিয়েই তদন্ত হবে।” বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, সঠিকভাবে তদন্ত হলে একাংশ পুর-কর্মী এবং আধিকারিকের নামও এই কাণ্ডে জড়িয়ে যেতে পারে। জড়াতে পারে জল দফতরের কিছু কর্মীর নামও। জল দফতরের পুরপ্রধান-পারিষদ বিশ্বনাথ পাণ্ডব বলেন, “তদন্ত
চলছে। কারও বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।”
এ দিকে, এই বিতর্কের মধ্যে জল দফতরের কাজকর্ম নিজে দেখতে শুরু করেছেন পুরপ্রধান। যা নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। এক পুর-আধিকারিক অবশ্য জানাচ্ছেন, পুরপ্রধান যে কোনও দফতরের কাজকর্মই দেখতে পারেন। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। |
|
|
|
|
|