পুরনোকে সরিয়ে নতুনের উত্থান।
এ বারে গ্র্যামির মঞ্চটাকে আর কোনও ভাবে কি ব্যাখ্যা করা যায়? মনে তো হয় না।
বছরের সেরা অ্যালবামের ট্রফিটাই তো ছিনিয়ে নিয়ে গেল তরুণ রক-ব্যান্ড ‘মামফোর্ড অ্যান্ড সনস’-এর ‘ব্যাবেল’। গোটা অনুষ্ঠানে একের পর এক পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল অন্যেরা। চারটে ট্রফি নিয়ে গেল একা ‘ব্ল্যাক কিজ’। মার্কাস মামফোর্ড বললেন, “ভেবেই নিয়েছিলাম, এ বার আর কিছুই জুটবে না। দিনটাই তো ব্ল্যাক কিজের। ওরা অবশ্য তার যোগ্যও।”
কিন্তু সেরার সম্মানটা রয়ে গেল ব্রিটিশ ফোক-রক গায়ক মার্কাসদেরই।
বয়সের ভারে মামফোর্ডদের থেকে খানিক পিছিয়ে থাকলেও চার-চারটে ট্রফি ঝুলিতে পুরেছে ‘ব্ল্যাক কিজ’। কী নেই তাঁদের ভাঁড়ারে,বেস্ট রক পারফরম্যান্স, বেস্ট রক সং, বেস্ট রক অ্যালবাম। প্রথম দু’টি ‘লোনলি বয়’-এর সৌজন্যে। আর তৃতীয়টি ‘এল ক্যামিনো’-র জন্য। চতুর্থ পুরস্কারটি পেয়েছেন ব্ল্যাক কিজ-এর পুরোভাগে থাকা ড্যান অরব্যাক সেরা ননক্লাসিক্যাল প্রযোজক। |
গ্র্যামি জয়ের পরে ‘মামফোর্ড অ্যান্ড সনস’। ছবি: এএফপি |
দিনটা ছিল আরও এক জনের। ব্ল্যাক কিজের থেকে ট্রফির সংখ্যায় এক ধাপ পিছিয়ে বেলজিয়ান-অস্ট্রেলীয় তরুণ গীতিকার গোটয়ে। বছরের সেরা রেকর্ড, গায়িকা কিম্বরার সঙ্গে ‘সামবডি দ্যাট আই ইউসড টু নো’ সেরা পপ এবং সেরা ‘অলটারনেটিভ’ অ্যালবাম। তিন-তিনটে ট্রফি নিয়ে নজর কাড়লেন আরও তিন স্ক্রিলেক্স, জে-জেড, ক্যানয়ে ওয়েস্ট। সেরা একক পারফরম্যান্সের পুরস্কার ছিনিয়ে নিলেন অ্যাডেল। বছরের সেরা গানটিও নতুনের হাতে। সেরা নবাগত শিল্পী হলেন যাঁরা, তাঁরাই পেলেন বছরের সেরা গানের স্রষ্টার সম্মানও ব্রুকলিনের পপ-ট্রায়ো ‘ফান’। অভাবনীয় হিট হয়েছিল তাঁদের “উই আর ইয়ং”। ‘হট ১০০’-এ ছ’সপ্তাহ টানা এক নম্বরে ছিল। বিক্রি হয়েছিল ৬০ লাখের বেশি কপি। উচ্ছ্বসিত নেট রেস বললেন, “কী ভেবে যে এই কোরাস গানটা লিখেছিলাম, কে জানে! এখন আর তেমন ইয়ং-ও নই।”
রেকর্ডিং অ্যাকাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট বিল ফ্রেমুথেরও একই অনুভূতি। তাঁর কথায়, “এ বছরটা যেন এক অধ্যায় শেষ হয়ে অন্য অধ্যায়ের শুরু।” মনোনয়নেও ছিল তারুণ্যের ছোঁয়া। মিগুয়েল, গানের জগতে সদ্য পা রেখেছেন। মনোনয়ন পেয়েছিলেন পাঁচ-পাঁচটা বিভাগে। গ্র্যামি জিতেছেন কেলি ক্লার্কসন, ক্রিস বোত্তি, রিহানাও। তবে নতুন নামের ভিড়ে পুরনোদের ছোঁয়া রেখে দিলেন দুই কিংবদন্তি রবিশঙ্কর এবং পল ম্যাকার্টনি। স্টেপলস সেন্টারে অবশ্য ঘুরেফিরে এল একটাই কথা পুরনো নয়, এ বারের গ্র্যামি নতুনদেরই।
|
অনুষ্কাকে টেক্কা রবিশঙ্করের
সংবাদসংস্থা • লস অ্যাঞ্জেলেস |
বিশ্ব সঙ্গীতে রবিশঙ্করের গ্র্যামি পুরস্কার হাতে অনুষ্কা। ছবি: এএফপি |
বাবা বলেছিলেন, “এ বারে বিশ্বসঙ্গীতের গ্র্যামিটা অনুষ্কার।” অনুষ্কার কথা ছিল, “বাবা থাকতে আমি? অসম্ভব!” তা-ই হল। পণ্ডিত রবিশঙ্করের বিশ্বসঙ্গীতের গ্র্যামি নিতে মঞ্চে উঠলেন পরাজিত অনুষ্কাশঙ্কর। এ বছর বিশ্বসঙ্গীতে মনোনয়ন পেয়েছিল অনুষ্কার ‘ট্রাভেলর’, আমাদৌ এবং মারিয়মের ‘ফোলিয়া’, দানিয়েল হো-র ‘অন এ জেন্টল আইল্যান্ড ব্রিজ’, হিউ ম্যাসেকেলার ‘জাবুলানি’ এবং রবিশঙ্করের ‘দ্য লিভিং রুম সেশনস পার্ট ১’। স্টেপলস সেন্টারে মঞ্চে উঠে অনুষ্কা বললেন, “বাবার কাছে হেরে দুঃখ নেই।” |