জয় বালাজি থেকে বরখাস্ত কর্মীদের ফেরাতে অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
জয় বালাজির ইস্পাত কারখানা থেকে বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের পুনর্বহালের দাবিতে এ বার পথ অবরোধ করলেন অসীম প্রামাণিক। সোমবার বিকেলে তিন স্থায়ী ও এক অস্থায়ী কর্মীকে কাজে ফেরানোর দাবিতে অসীমবাবুর নেতৃত্বে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রোড অবরোধ করেন তাঁর কয়েক জন অনুগামী। এর ফলে যানজট হয়। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব অসীমবাবুর সঙ্গে সংগঠনের কোনও যোগের কথা অস্বীকার করলেও তিনি নিজেকে আইএনটিটিইউসি নেতা বলেই দাবি করে আসছেন। এ দিন অসীমবাবু অভিযোগ করেন, তিন স্থায়ী কর্মীকে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগেই বরখাস্ত করেছিলেন। এর পরে শনিবার সুনীল বাউরি নামে এক অস্থায়ী কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। অসীমবাবুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যোগ দেওয়ার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ সুনীলবাবুকে কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নেত্রী। দলীয় সমর্থক হিসেবে সুনীলবাবু পানাগড়ের সভায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরার পরে কর্তৃপক্ষ তাঁকে বরখাস্ত করেছেন।” তাঁর আরও দাবি, অনুপস্থিতির জন্য সুনীলবাবুর বেতন কেটে নিতে পারতেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাঁকে বেআইনি ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই দাবি সুনীলবাবুরও। অবিলম্বে বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের কাজে না ফেরানো হলে কারখানার গেটে আন্দোলন শুরুর হুমকিও দিয়েছেন অসীমবাবু।
জয় বালাজির কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য ওই অস্থায়ী কর্মীকে বরখাস্ত করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় কারখানায় এসে সহকর্মীদের বিরক্ত করেছিলেন। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে কাজ থেকে সরানো হয়েছে। কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট নিরঞ্জন গৌরীসারিয়া বলেন, “নির্দিষ্ট কারণে ওই কর্মীদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।” অসীমবাবুদের আন্দোলন নিয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাননি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
গত ১৫ ডিসেম্বর অসীমবাবু ও তাঁর অনুগামী কারখানার তিন স্থায়ী কর্মী বিক্ষোভের নামে ওই ইস্পাত কারখানার আধিকারিকদের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। সেই রাতেই মুখ ঢাকা কয়েক জন দুষ্কৃতীর হাতে নিজের আবাসনেই প্রহৃত হন এক আধিকারিক। কারখানা কর্তৃপক্ষ অসীমবাবুদের সংগঠনকে অবৈধ ঘোষণা করেন। দিন কয়েক আগে অসীমবাবু পোস্টার সাঁটিয়ে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেন। এর পরে সিটিসেন্টারে একটি সভাও করেন। এ দিন আবার রাস্তা অবরোধ করলেন।
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় প্রভাত চট্টোপাধ্যায় শুরু থেকেই দাবি করছেন, অসীমবাবু তাঁদের কেউ নন। প্রভাতবাবুর বক্তব্য, “শ্রমিকদের দাবিদাওয়া শ্রম দফতরের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মেটাতে হবে। আন্দোলনের নামে কোনও ভাবেই জঙ্গিপনা করা যাবে না।” |