মেছোভেড়ির দখলকে কেন্দ্র করে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তেজনা সৃষ্টি হল হাড়োয়ায় গোপালপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় গোষ্ঠীর ৪ জন। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৮-১০টি আলাঘর। চলে বোমা ও গুলি। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোপালপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১২৬৫ বিঘা জমি নিয়ে রয়েছে গাজিতলা মেছোভেড়ি। বর্তমানে ভেড়ি এলাকার মালিক প্রায় ১৯৫ জন। এই ভেড়িকে কেন্দ্র করে বিবাদ দীর্ঘদিনের। আগে ওই জমি সিপিএমের দখলে থাকলেও ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর গাজিতলা মেছোভেড়ির দখল নেয় তৃণমূল। কিন্তু জমি-বিবাদ বন্ধ হয়নি। জমির মালিকপক্ষের অভিযোগ, প্রথমে ভূমিহীন কৃষকদের বিলি করার জন্য তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ বিঘা জমি চাওয়া হয়। এই বছরও ভূমিহীনদের বিলি করার জন্য ৩০০ বিঘা জমি চাওয়া হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ ১০০ বিঘার বেশি জমি দিতে অস্বীকার করায় ফের শুরু হয় গণ্ডগোল। সম্প্রতি এই নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছিল এলাকায়। আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন। রবিবার ফের অশান্তি।
গোষ্ঠীকোন্দল থামানোর জন্য শনিবার হাড়োয়ায় গিয়েছিলেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলাম। হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক জুলফিকার আলি মোল্লার সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর আলোচনাও হয়।
রবিবার মালিকপক্ষ ওই মেছোভেড়ির দখল নিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। মালিক পক্ষের তরফে রতন আহমেদ বলেন, “আমাদের কাছ থেকে ৫০০ বিঘা জমি ভূমিহীন চাষিদের দেওয়ার জন্য চাওয়া হয়। আমরা ‘দলীয় তহবিলে’ ১০ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মেটাই। এরপর দলের সাংসদ ও বিধায়ক আশ্বস্ত করায় রবিবার আমরা জমির দখল নিতে গিয়েছিলাম। তখন আমাদের উপর সিপিএমের একাংশের সঙ্গে মিলিত ভাবে দলেরই একটি গোষ্ঠীর সমর্থকেরা চড়াও হয়। বোমা ও গুলি নিয়ে হামলা চালানো হয়।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের গোষ্ঠীকোন্দল বার বার প্রকাশ্যে আসায় দৃশ্যতই বিব্রত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস বলেন, “এই মেছোভেড়ির দখল নিয়ে জমির মালিক এবং ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। দু’পক্ষই আমাদের সমর্থক। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। |