|
|
|
|
হুমকি দিলেন শুভেন্দু |
পঞ্চায়েত ভোট মিটলেই দখল হলদিয়া পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক ও হলদিয়া |
ঘেরাও-বিক্ষোভ চলছে। নির্বাচিত পুরবোর্ডকে কাজকর্ম করতে দিতে বাধা দেওয়াও অব্যাহত।
এ বার এক ধাপ এগিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের পরেই সিপিএম পরিচালিত হলদিয়া পুরসভা তাঁদের দখলে আসবে বলে ঘোষণা করলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে দলের পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনে শুভেন্দু বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের পরেই হলদিয়া পুরসভায় তৃণমূলের চেয়ারম্যান হবে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। আজকে অঙ্ক কিছু বলব না। কী করে পারব, পঞ্চায়েত ভোটের পরে বলব।”
প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচিত বোর্ড ফেলে দিয়ে পুরসভা নিজেদের দখল আনার এতটা প্রত্যয়ী ও আগাম ঘোষণা প্রকাশ্যে কোনও সাংসদ করেন কী ভাবে? যেখানে গত জুন মাসেই হলদিয়া পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে চতুর্থ বারের জন্য পুরবোর্ড গঠন করেছে বামফ্রন্ট। ২৬ আসনের পুরসভায় বামফ্রন্টের কাউন্সিলর ১৫ জন, তৃণমূলের ১১।
তার পরেও কী ‘অঙ্কে’ শুভেন্দু বোর্ড পাল্টানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, জানা নেই পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠের। সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্ত্রী তমালিকাদেবীর প্রতিক্রিয়া, “উনি যদি মানুষের রায় বদলাতে পারেন, তবে করে দেখাবেন। আমরা ক্ষমতালোভী নই। আমার কাউন্সিলররা চৈত্র সেলের সামগ্রী নন! তাঁদের প্রতি আস্থা রয়েছে।”
আর লক্ষ্মণ শেঠের মতে, ‘অঙ্ক’ বলতে এখানে মারধরের কথা বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের এই অসহিষ্ণুতা গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। গণতন্ত্র রক্ষার বদলে প্রশাসনও ওদের হয়েই কাজ করছে।”
গত বছর ২৬ জুন তমালিকাদেবী পুরপ্রধান হিসেবে চতুর্থ বারের
জন্য শপথ নেন। সেই
দিন থেকেই পুরসভায় লাগাতার বিক্ষোভ দেখিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা। বোর্ড মিটিংগুলিতে নিজেরা থাকছেন
না, উল্টে তা বানচাল করতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দিনের পর দিন ঘেরাও করে রাখছেন পুরভবন।
পুরভবনে ঢুকতে চেয়ে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে একাধিক বার দরবার করেছেন বাম কাউন্সিলরেরা। তাঁদের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছেন সিপিএমের জেলা ও রাজ্য স্তরের নেতৃত্বও। কাজ হয়নি কিছু। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, বোর্ড গঠনের ছ’মাসের মাথায় গত ডিসেম্বরে অতিথিশালায় বসে পঞ্চম উন্নয়নমূলক বোর্ড মিটিং করতে হয় তমালিকাদেবীকে। ওই মিটিংয়ে চূড়ান্ত অশান্তির পর রাজ্যপালকে লিখিত অভিযোগও জানান তমালিকাদেবী। রাজ্যপাল বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করলে গণ্ডগোল আরও বাড়ে। তৃণমূল সাংসদের প্ররোচনাতেই এই ‘অরাজকতা’ চলছে বলে অভিযোগ জেলা সিপিএম নেতৃত্বের। ডিসেম্বরে শিল্পশহরের হেলিপ্যাড ময়দানে এক সভায় শুভেন্দু বলেছিলেন, “বোর্ড গঠনের ছ’মাস পরে আপনারা যে দিন চাইবেন বোর্ড পাল্টে দেব। সেই ক্ষমতা ও সাহস আমাদের আছে।” সিপিএম নেতৃত্বের মতে, বারবার শুভেন্দুর এই ‘হুমকি’তে স্পষ্ট, তৃণমূল হলদিয়ার ক্ষমতা দখলে কতটা মরিয়া। |
|
|
|
|
|