|
|
|
|
সাত বছর পর টেস্ট দল থেকে বাদ গোতি, ফিরলেন হরভজন |
বাদ পড়ার দিনই ফেরার শপথ নিলেন গম্ভীর |
স্বপন সরকার • নয়াদিল্লি |
প্র্যাক্টিস সেরে বাড়ি ফেরার পথেই তিনি খবরটা পেয়ে যান। এবং গাড়ি থেকেই ফোন করে খারাপ খবরটা জানিয়ে দেন তাঁর কোচকে।
“স্যর, একটা খারাপ খবর আছে। দল থেকে আমি বাদ পড়ে গিয়েছি।” এর পর তিনি নিজেই আশ্বস্ত করেন স্যরকে, “কোই বাত নেহি। ব্যাটে রান আসছিল না, তাই বাদ পড়েছি। আপনি চিন্তা করবেন না। দেখবেন, আমি আবার দলে ফিরব।”
তিনি গৌতম গম্ভীর বাদ পড়ার দিন থেকেই ফেরার শপথ নিচ্ছেন। এবং তাঁর স্যর সঞ্জয় ভরদ্বাজ নিশ্চিত, ছাত্র কথা রাখবেই।
গম্ভীরের বাদ পড়ার খবরটা পাওয়ার পর রবিবার যখন ভরত নগরে ভরদ্বাজের কোচিং ক্যাম্পে পৌঁছনো গেল, তখন সামান্য দেরি হয়ে গিয়েছে। উন্মুক্ত চন্দের সঙ্গে প্র্যাক্টিস শেষ করে বেরিয়ে গিয়েছেন গম্ভীর। এবং বাদ পড়ার খবরটাও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর কোচকে।
কোচের সঙ্গে ছাত্রের ফোনালাপ অবশ্য এখানেই শেষ নয়। ফিরে আসার লড়াইটা কোন পথে চালাতে চান তিনি, পরে ভরদ্বাজকে সেটাও জানালেন গম্ভীর। এ দিনও আড়াই ঘণ্টা নেট প্র্যাক্টিস করেছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার। কিন্তু তাতে মোটেও সন্তুষ্ট হননি। জাতীয় দলে ফেরার জন্য গম্ভীরের ব্লু প্রিন্টটা আপাতত এ রকম: হাতে যে ক’টা দিন সময় আছে, কোচের কাছে প্র্যাক্টিসের সময় বাড়াতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ‘এ’ দলের ম্যাচটায় বড় রান করতে হবে। গম্ভীরের যুক্তিটা এ রকম: অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলেও নিশ্চয়ই স্টার্ক, জনসন, প্যাটিনসন, সিডলদের মধ্যে কেউ কেউ খেলবেন। এবং এই পেস ব্যাটারি সামলে রান করতে পারলে শেষ দুটো টেস্টে দলে ফেরার ছাড়পত্র অবশ্যই মিলতে পারে। |
হরিষে-বিষাদে |
প্লিজ, কোনও সহানুভূতি জানাবেন না। এখন শুধু ট্রেনিং আর ইন্ডিয়া এ ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে আছি। এর আগেও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো পরিস্থতিতে পড়েছি। এটা নতুন কিছু নয়। লড়াইটা চলবেই। কাম অন, তৈরি হও ছেলেরা। নিজেদের ইস্পাত কাঠিন্যটা বোঝানোর সময় এসেছে। শিখর আর বিজয়ের জন্য সত্যি খুব ভাল লাগছে। যে কোনও মূল্যে চাই ভারত জিতুক। আমি থাকি বা না থাকি কিছু এসে যায় না। |
বাদ পড়ে টুইটারে গৌতম গম্ভীর |
আমার সবচেয়ে প্রিয় দলের বিরুদ্ধে বল করার জন্য মুখিয়ে আছি। ভারতীয় দলে ফিরতে পেরে অনেকটা চাপমুক্ত লাগছে। এই ইরানি ট্রফির ম্যাচটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে ভাল বল করেছি। এ বার আসল লড়াইয়ের অপেক্ষা। |
দলে ফিরে হরভজন সিংহ |
পনেরো জনের দল |
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (অধিনায়ক), বীরেন্দ্র সহবাগ, সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি, শিখর ধওয়ান, মুরলী বিজয়, অজিঙ্ক রাহানে, চেতেশ্বর পূজারা, রবীন্দ্র জাডেজা, হরভজন সিংহ, ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, প্রজ্ঞান ওঝা, অশোক দিন্দা। |
|
কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক তাঁর কোচকে পরিষ্কার বলেছেন, “আমার নিজের ওপর আস্থা রয়েছে। যখন মাঠে নামি তখন দেখি না, কোন দলের হয়ে খেলছি। দেশ হোক, রাজ্য হোক, ক্লাব হোক সব সময় চেষ্টা করি নিজের সেরাটা দেওয়ার। এ বারও সেটাই করব। এবং আশা করছি সফলও হব।” টেস্ট দল থেকে ফর্মের কারণে গম্ভীর শেষ বার বাদ পড়েছিলেন ২০০৫-এর ডিসেম্বরে। পরের বছর পাক সফরে সুযোগ পাননি তিনি। এর পর ২০০৭-এর ডিসেম্বরে দলে ফেরার পর ফর্মের কারণে আর বাদ পড়তে হয়নি গম্ভীরকে।
ছাত্রকে যখন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেখাচ্ছে, তখন তাঁর কোচ কিন্তু যথেষ্ট উত্তেজিত। কিছুটা বিষণ্ণও। এ দিন দুপুরে ভরত নগরের মাঠে দাঁড়িয়ে ভরদ্বাজ আঙুল তুলছেন ভারতীয় কোচ ডানকান ফ্লেচারের দিকে। “গম্ভীর যখন মাঝে রান পাচ্ছিল না, তখন ওর ব্যাটিং স্টান্সটা হঠাৎ বদলে দেয় ফ্লেচার। গোতিকে বলে গার্ড নেওয়ার সময় ব্যাটটা হাওয়ায় রাখতে। সেটা করতে গিয়ে ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচগুলোয় খেই হারিয়ে ফেলে। নড়বড়ে হয়ে যায়। আমি পরে ওকে বলি, তুই পুরনো টেকনিকেই (ব্যাট মাটিতে রেখে) খেল। সেটা করে কিন্তু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজে ভালই খেলেছে,” দাবি কোচের। পাশাপাশি একটু অভিমানীও শোনায় ভরদ্বাজকে, “বুঝতে পারি না, কী ভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে একটা সেঞ্চুরি করে মুরলী বিজয়ের মতো প্লেয়ার ভারতীয় টিমে চলে আসে। তবে এটা মনে রাখবেন, মুরলী বা ধওয়ান কিন্তু লম্বা রেসের ঘোড়া নয়। আমার শিষ্য লম্বা রেসের ঘোড়া। ও দলে ফিরবেই।” |
|
|
|
|
|