দীর্ঘ মেয়াদের নিয়মিত সঞ্চয়ে মন দিন এখন
কিছুতেই লক্ষ্মণরেখা পেরিয়ে উপরে উঠতে পারছে না শেয়ার বাজার। কাজে এল না সুদ হ্রাসের টনিকও। অন্য দিকে বিয়ের মরসুমেও ম্লান সোনা। ফলে এই দুই ক্ষেত্রে নতুন করে লগ্নির ব্যাপারে মানুষ এখন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে রাতারাতি বড় লাভের চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে ফিরতে হবে সনাতন লগ্নির জগৎ ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে। অল্প করেও হলেও নিয়মিত ও দীর্ঘ মেয়াদে টাকা জমাতে হবে সুরক্ষিত জায়গায়। এতে রাতারাতি বড় লাভ যেমন আসবে না, তেমনই থাকবে না মূল টাকা খোয়ানোর ভয়। ছোট আকারে নিয়মিত সঞ্চয় দীর্ঘ মেয়াদে বড় তহবিল গড়ে দেয়। মেটায় বড় প্রয়োজন। হারাতে হয় না রাতের ঘুমও। তাই এক নজরে আমরা দেখব, কোন কোন প্রকল্পে নিয়মিত টাকা জমানো যায় সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে।

• রেকারিং ডিপোজিট: অ্যাকাউন্ট খোলা যায় ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে। এবং কিছু গৃহঋণ সংস্থাতেও। অতি ছোট আকারেও জমানো যায় ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে। একটির মেয়াদ শেষ হলে শুরু করা যায় নতুন অ্যাকাউন্ট। একই সঙ্গে চালানো যায় একাধিক অ্যাকাউন্ট। যে সব জায়গায় ‘ফ্লেক্সি ডিপোজিট’ ব্যবস্থা আছে, সেখানে মাঝেমধ্যে বেশি টাকাও জমা করা যায়। একটি হিসাব অনুযায়ী, কম বয়স থেকে মাসে ৩,০০০ টাকা করে গড়ে ৯% সুদে ৩০ বছর নিয়মিত টাকা জমালে, সুদে-মূলে ৫১ লক্ষ টাকার তহবিল গড়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে লগ্নিকারীর মূল জমা মাত্র ১০.৮০ লক্ষ টাকা। এই উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, ক্রমপুঞ্জিত সুদের (কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট) শক্তি কত!
• মিউচুয়াল ফান্ড এসআইপি: অনেকটা রেকারিং ডিপোজিটের মতো। তবে আয়ের পরিমাণ আগে থেকে জানা যায় না। মাসে ৫০০ বা তার বেশি টাকা জমাতে হয় পছন্দের মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে। সামান্য ঝুঁকি থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে লাভই হয়, কারণ এই পদ্ধতিতে আপনি ইউনিট কেনেন গড় দামে। ইউনিটের ন্যাভ গড়ের উপরে গেলে লাভ দেখতে পান। এসআইপি অ্যাকাউন্ট খোলা উচিত (সুবিন্যস্ত) ডাইভারসিফায়েড ইক্যুইটি প্রকল্পে। এতে ঝুঁকি ছড়িয়ে থাকে। ঝুঁকি আরও কমাতে চাইলে ব্যালান্সড ফান্ড বা ডেট ফান্ডে অ্যাকাউন্ট খুলুন। করের ব্যাপারে সুবিধা আছে মিউচুয়াল ফান্ডে। টাকা জমা করতে হয় ইসিএস পদ্ধতিতে।

• পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ): দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত টাকা জমানোর ভাল, সুরক্ষিত জায়গা। সুদ ৮.৮%। পুরো করমুক্ত। ৮০সি ধারায় কর ছাড় মেলে মূল জমায়। অ্যাকাউন্টের প্রাথমিক মেয়াদ ১৫ বছর। মেয়াদ শেষে ৫ বছর করে বাড়ানো যায়। বছরে কমপক্ষে জমা করতে হয় ৫০০ টাকা। ১২ বার পর্যন্ত অর্থাৎ মাসে একবার করে টাকা জমা করা যায় এই অ্যাকাউন্টে। স্বনির্ভর মানুষ, যাঁদের সংস্থাগত প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা নেই, তাঁদের জন্য পিপিএফ অতি আদর্শ সঞ্চয়ের জায়গা।

• সোনা: সম্প্রতি সোনা থমকে থাকলেও বেশি দিন তা থাকার কথা নয়। এর কদর সারা পৃথিবীতে এবং জোগান সীমাবদ্ধ। তাই ভবিষ্যতে সোনার দরকার থাকলে অল্প অল্প করে স্বর্ণসঞ্চয় করুন নিয়মিত। বর্তমান দামে মাসে ৩,০০০ টাকা খরচে কমবেশি ১ গ্রাম করে সোনা কেনা যায়। কয়েকটি বড় গয়নার দোকানে এই প্রকল্প আছে। মেয়াদ সাধারণত ১২-১৮ মাস। এক মাসের অতিরিক্ত কিস্তি সাধারণত সংশ্লিষ্ট সংস্থা জমা করে। প্রতি মাসে লগ্নি করা যায় স্বর্ণপত্রেও। এসআইপি পদ্ধতিতে প্রতি মাসে টাকা রাখা যায় মিউচুয়াল ফান্ডের গোল্ড ফান্ডে। শেয়ার বাজার থেকে নিয়মিত কেনা যায় গোল্ড ইটিএফ।
অভিজ্ঞ লগ্নিকারীরা অবশ্য বাজার বুঝে ব্লু-চিপ শেয়ার ও বন্ডও কিনতে পারেন। সব ভাল জিনিসই দীর্ঘ মেয়াদে ভাল ফল দেয়। তবে রাতারাতি বড় লাভ যেখানে, সেখানে ঝুঁকিও বেশি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.