অধীরদের বিরুদ্ধে মামলা
রাজ্যকে দুষে মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের পাশে দিল্লি
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের বাংলোয় তাণ্ডবের ঘটনায় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী ও বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী-সহ ১২০০ কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেছে। তবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড অধীরবাবুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাপারে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পুলিশ হেফাজতে নবগ্রামের কংগ্রেস কর্মী সফিকুল শেখ গত ৭ জানুয়ারি জেল হেফাজতে মারা যান। সেই মৃত্যু নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের বাংলোর সামনে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গোলমাল হয়। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, দাঙ্গা বাধানো, দাঙ্গা করতে উস্কানি দেওয়া, পুলিশ কর্মীদের মারধর করা ও অনধিকার প্রবেশ-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে শুক্রবার অধীরবাবুদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখে সুবিধাজনক সময়ে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। জামিন যোগ্য ও জামিন অযোগ্য দু’টি ধারাতেই এফআইআর করা হয়েছে।” এসপি কারও নাম না করলেও জেলা পুলিশ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ওই এফআইআর-এ নাম রয়েছে অধীর, মনোজবাবু-সহ বেশ কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়কের। তবে ভিডিও ক্লিপিংস হাতে পাওয়ার পর ওই মামলায় অধীর ও মনোজবাবুদের নাম রাখা না রাখার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
বহরমপুরের ঘটনায় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। রাহুল গাঁধী যখন শিষ্টাচারের কথা বলছেন, তখন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িয়ে পড়া কতটা সমীচীন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার পরে প্রথমে এ ব্যাপারে মন্তব্যে রাজি হননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে হাইকম্যান্ড খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। তারপর এ দিন খোলাখুলিই অধীরের পাশে দাঁড়ায় হাইকম্যান্ড। কংগ্রেস মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরী পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, “গতকালের ঘটনাকে ঠিক তাণ্ডব বলা যায় কি!” রেণুকার কথায়, “আগে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের সরকার বলুক তাদের কাছে তাণ্ডবের সংজ্ঞা কী?” তাঁর আরও বক্তব্য, “তৃণমূল সরকার আগে তাদের তাণ্ডবের সংজ্ঞা দিন, তার পর অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাব।” তবে এই ব্যাপারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এবং প্রশাসনের আচরণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে হাইকম্যান্ডও অবগত। সম্প্রতি জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির চলাকালীন রাহুলের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে রাজ্যের পরিস্থিতি জানান অধীর। তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বলেও অধীর রাহুলকে জানান। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে মজবুত করতে আরও আগ্রাসী হতে হবে বলে অধীর প্রস্তাব দেন। আরও সক্রিয় হয়ে মানুষের প্রয়োজনের বিষয়গুলি নিয়ে আন্দোলনে নামার কথাও বলেন তিনি। তাতে সম্মতিও দিয়েছিলেন রাহুল। ফলে অধীরের শাস্তির কোনও প্রশ্নই উঠছে না বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।
অধীর বলেন, “স্মারকলিপি না নিতে চেয়ে তিন জন সাংসদ, কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বেশ কয়েক জন বিধায়ককে জেলাশাসক অপমান করায় ওই দিন কংগ্রেস কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাতে ২-৩টি ফুলের টব ভেঙেছে মাত্র। আমি ঝুঁকি নিয়ে কংগ্রেস কর্মীদের শান্ত করি।” এর ফলে বরং বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে অধীরের দাবি। তাঁর বক্তব্য, “স্মারকলিপি না নিতে চেয়ে ওই দিনের ঘটনা তো জেলাশাসকই আমন্ত্রণ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে রেজিনগরের উপনির্বাচনের আগে দিদিমণির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নির্দেশে কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের জেলে পাঠাতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।” এর প্রতিবাদে কংগ্রেস রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামবে বলে অধীর জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.