এক ঝলকে...
পৃথিবী
কঠোরে কোমলে
তেহরান ইরান কি এ বার দয়া করে পরমাণু প্রশ্নে একটু ‘সিরিয়াস’ হবে? ভেবে দেখবে, তারা কোথায় পৌঁছতে চায় এই কার্যক্রম নিয়ে, কী করতে চায়? প্রশ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে ওয়াশিংটনের প্রবল রাগের শেষতম প্রকাশ: পারস্য উপসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন রেখে ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও খানিক শক্তপোক্ত করল আমেরিকা। এবং তার পরই বার্তা এল: তেহরান এ বার একটু মাথা ঠান্ডা করে ওয়াশিংটনের সঙ্গে এক টেবিলে বসুক, তাদের পরমাণু নীতির ভবিষ্যৎ বিষয়ে আলোচনা হোক। সে দেশের শীর্ষ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খোমেইনি-র সাফ কথা আমেরিকা নিষেধাজ্ঞার মাত্রা ও মেয়াদ বাড়িয়ে যাবে, আবার শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাবে, সেটা হয় না; বন্দুকের নলের সামনে ইরান গিয়ে নতজানু হয়ে বসে পড়বে, এমন যদি ভেবে থাকে বারাক ওবামার সরকার, খুব ভুল হচ্ছে। বৈঠক আপাতত হল না! ওয়াশিংটনের উত্তর: দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করতে আমেরিকা রাজি, কিন্তু বৈঠকের প্রাথমিক উদ্যোগ নিতে হবে ইরানকেই।
কূটনীতির পিংপং খেলা চলছে, চলবে। ইতিমধ্যে কঠোরতর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে ইরানে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে চাপ বাড়ছে, আর তার প্রতিক্রিয়ায় বাড়ছে মার্কিন-বিরোধী সরকারি জিগির, শক্ত হচ্ছে মৌলবাদীদের হাত। খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলতে হবে, কেননা অনেক দিন পর ইরান এক রকম রাজি হয়ে গিয়েছিল ফেব্রুয়ারির ২৬-এ কাজাখস্তানে ‘পি ৫+১’ দেশগুলির (অর্থাৎ ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন) সঙ্গে বসতে। যদিও সেই বৈঠকে বিরাট কিছু ঘটার আশা ছিল না, হয়তো মূলস্রোতের কূটনীতিতে তেহরানকে ফেরানোর চেষ্টাটা শুরু হতে পারত সেখান থেকে। তার আগেই এই সংঘর্ষময় পরিস্থিতি এসে পড়ায় এখন শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠকই অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

আত্মাহুতির ‘অপরাধ’
কিংঘাই কিংঘাই প্রদেশে ধরপাকড় তুঙ্গে উঠেছে। একসঙ্গে বারো জন তিব্বতির হাতে হাতকড়া পরাল কিংঘাই প্রদেশের সরকার, বেজিং-এর কেন্দ্রীয় নির্দেশে। কী অপরাধ এঁদের? তিব্বতের স্বশাসনের আন্দোলন করেন এঁরা। তা, সে অপরাধে তো প্রায় প্রতিটি তিব্বতিই অপরাধী ধরতে হবে! আসল কথা তা নয়। আসলে, এই ক’জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, আন্দোলনের পথ হিসেবে তাঁরা আত্মাহুতির আহ্বান জানিয়েছেন তাঁদের বক্তৃতায় বা লেখাপত্রে। এ দিকে গত সপ্তাহেই শততম মানুষটি কিংঘাই প্রদেশে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মবলিদান করেছেন। বিশ্বময় এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় তিব্বতের স্বশাসনের দাবিতে, চিনের অপশাসন থেকে মুক্ত হওয়ার আর্তিতে তিব্বতি সাধারণ মানুষের রাজনীতি গত চার বছরে কতটা তীব্র হয়ে উঠেছে, তার উপর আবার প্রচারমাধ্যমের কটকটে আলো এসে পড়ল। বেজিং-এর মতে, এই সব কিছুর পিছনেই দলাই লামার প্রচ্ছন্ন হাত।

নজরবন্দি
আটচল্লিশ বছর বয়সি চোকরি বেলাইদ ছিলেন টিউনিসিয়ার মানবাধিকার আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা। রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে অথবা প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তিনি নিরন্তর প্রতিবাদ চালিয়ে গেছেন, তদন্তের নামে ক্ষমতাবান অপরাধীদের আড়াল করার যে অপচেষ্টা চলে, তথ্য এবং যুক্তি দিয়ে তার বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করেছেন। প্রত্যাশিত ভাবেই তাঁকে বারংবার ভয় দেখানো হয়েছে, প্রাণের ভয়ও। এবং গত বুধবার উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির রাজধানী টিউনিস-এ, নিজের বাড়ির সামনে নিহত হয়েছেন তিনি। মোটরসাইকেল আরোহী আততায়ী তাঁকে গুলি করে এবং পালিয়ে যায়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। শুক্রবার, বেলাইদের অন্ত্যেষ্টির দিন শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে সাধারণ ধর্মঘট হয়েছে, পঁয়ত্রিশ বছরে প্রথম ‘বন্ধ’। সরকারের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। টিউনিসিয়া অগ্নিগর্ভ। ঐতিহাসিক রোমের প্রতিদ্বন্দ্বী কার্থেজ-এর ভূমিতে গড়ে ওঠা এই দেশটিতেই ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুহাম্মদ বুয়াজিজি নামে এক দোকানি নিজের গায়ে অগ্নিসংযোগ করেন। ৪ জানুয়ারি, ২০১১ তাঁর মৃত্যু হয়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে টিউনিসিয়া। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন তেইশ বছরের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট জিনে এল আবেদিন বেন আলি। বিদ্রোহের অগ্নিতরঙ্গ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে আরব দুনিয়ার একের পর এক দেশে। টিউনিসিয়া সেই অর্থে ‘আরব বসন্ত’-র সূতিকাগার। গত দু’বছরে দেশটিতে অশান্তি বিস্তর ছিল, ইসলামপন্থী এন্নাদা দলের নেতৃত্বে গঠিত জোট সরকারের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী দলগুলির প্রবল বিরোধ ছিল, রাষ্ট্রীয় অ-গণতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমছিল। বেলাইদের হত্যা সম্ভবত স্ফুলিঙ্গটি সরবরাহ করেছে। বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রী হামাদি জেবালি চটপট ঘোষণা করেছেন, তিনি অ-রাজনৈতিক মন্ত্রিসভা গঠন করে নতুন নির্বাচন ডাকবেন। এই আপসের চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয়, তবে ‘দ্বিতীয় প্রজন্মের’ আরব বসন্তে মিশরের সঙ্গে টিউনিসিয়াও যুক্ত হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.