পাড়ার দু’টি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিল চার যুবক। স্থানীয় চার যুবক তার প্রতিবাদ করলে ইভটিজারেরা প্রতিবাদী এক যুবককে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে পালায়। শনিবার দুপুরে বরাহনগরের আরআইসি বাজারের ঘটনা। পুলিশ জানায়, আহত মঙ্গল সর্দার আরজিকরে ভর্তি। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে সন্ধ্যায় বরাহনগর থানায় বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস ও এসইউসি। তবে রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
পুলিশ জানায়, আরআইসি বাজারের পিছনের রাস্তা দিয়ে দুই স্কুলছাত্রী সাইকেলে বাড়ি ফেরার সময়ে চার যুবক তাদের উত্ত্যক্ত করে। তারা নানা রকম কুপ্রস্তাবও দিচ্ছিল। সেই সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে তিন বন্ধুকে নিয়ে যাচ্ছিলেন মঙ্গল। পুলিশ জানায়, মঙ্গল ওই ছাত্রীদের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তারা তাঁকে সব জানায়। মঙ্গল ও তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে ওই যুবকদের কথা কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি বেধে যায়। তখন উত্ত্যক্তকারী এক যুবক কোমর থেকে রিভলভার বার করে মঙ্গলকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। মঙ্গলের কাঁধে গুলি লাগে। এর পরেই দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “একটা আওয়াজ শুনে বেরিয়ে দেখি, একটি ছেলেটি পড়ে রয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাটি। আর দু’টি ছেলে সাইকেলে পালাচ্ছে।” |
থানায় কংগ্রেসের বিক্ষোভ। শনিবার সন্ধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র |
ওই ছাত্রীদের পরিবার জানিয়েছে, বাড়িতে পৌঁছে গোটা ঘটনা জানায় তারা। এক ছাত্রীর বাবা বলেন, “সব শুনে প্রথমে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যাই। সেখান থেকে আরজিকরে নিয়ে যাওয়া হয় মঙ্গলকে।” আরজিকরের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানান, অস্ত্রোপচার করে মঙ্গলের ডান কাঁধে আটকে থাকা গুলি বার করা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
হাসপাতাল থেকে ফোনে মঙ্গল বলেন, “আমি বনহুগলির এক রঙের কারখানায় কাজ করি। ছুটির পরে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাচ্ছিলাম। তখন পাড়ার একটি মেয়ে এসে বলে, চারটি ছেলে তাদের বিরক্ত করছে। শুনেই আমরা গেলাম। সাইকেলে বসা একটি ছেলে পিস্তল বার করে খুনের হুমকি দিল। বললাম, ‘ভয় দেখাস না। ওটা পকেটে ঢোকা।’ তখন ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে গুলি চালাল।”
এডিসি (বেলঘরিয়া) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “দুই ছাত্রী ও মঙ্গলের বন্ধুদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।” ঘটনার পরে আহত যুবকের বাড়ি যান বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক ও তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জন পাল। আরআইসি বাজারে পুলিশি টহলদারি নিয়ে স্থানীয়েরা অভিযোগ জানান তাঁদের কাছে। অঞ্জনবাবু বলেন, “বরাহনগরে জনবসতির তুলনায় পর্যাপ্ত পুলিশ নেই। তবুও থানা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করছে। আমার অনুমান, এই ঘটনায় ত্রিকোণ প্রেমের বিষয় জড়িত।” পুলিশ সূত্রের খবর, এক ছাত্রীর সঙ্গে মঙ্গলের বন্ধুত্ব ছিল। তাই ত্রিকোণ প্রেমের বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে ওই দুই ছাত্রী ও মঙ্গলের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। পুলিশের খাতায় নাম আছে এমন কয়েক জনের ছবিও দেখানো হয় তাদের। এক দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে বরাহনগরে ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অভিযোগ রয়েছে। দিন কয়েক আগেই সে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। |