পাঁচ শতাংশের তলানিতে ঠেকার পূর্বাভাসকে নস্যাৎ করে ফের ৮.৫% বৃদ্ধির ‘জাদু’ হার ছুঁতে আত্মবিশ্বাসী পি চিদম্বরম।
শনিবার মুম্বইয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর প্রত্যয়ী ঘোষণা, “আর্থিক বছরের শেষে বৃদ্ধি ৫ শতাংশে নামবে বলে যে পূর্বাভাস সেন্ট্রাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অর্গানাইজেশন (সিএসও) দিয়েছে, তা চিন্তার। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বছর শেষে বৃদ্ধির প্রকৃত হার দাঁড়াবে ৫.৫ শতাংশের আশেপাশে।” আরও এক কদম এগিয়ে তিনি বলেন, “পরের অর্থবর্ষে এই হারই পৌঁছে যাবে ৬ থেকে ৭ শতাংশে। সঠিক ও পোক্ত নীতিতে অবিচল থাকলে ৮.৫% বৃদ্ধির সোনার দিন ফিরে পাওয়াও সম্ভব।”
বাজেটের মুখে অর্থনীতি আর রাজনীতির একেবারে বিপরীত মেরুর চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে প্রায় দড়ির উপর হাঁটতে হচ্ছে চিদম্বরমকে। কিন্তু এ দিন তাঁর কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত, সেই সব ঝক্কি সামলে মূলত তিনটি চাহিদা পূরণের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছেন তিনি
(১) বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরানো।
(২) রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ।
(৩) কর ছাড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি। |
শনিবার মুম্বইয়ে রাজীব গাঁধী ইক্যুইটি সেভিংস প্রকল্পের উদ্বোধনে অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে প্রকল্পটিকে আরও আকর্ষণীয় করার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি। ছবি: পিটিআই |
আর সেই কারণেই শিল্পের পক্ষে মূলধন জোগাড় সহজ করতে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়কে আরও বেশি করে শেয়ার বাজারে টেনে আনতে চাইছেন অর্থমন্ত্রী। কথা দিয়েছেন আসন্ন বাজেটে রাজীব গাঁধী ইক্যুইটি সেভিংস প্রকল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার। বাজারে লগ্নির পথ প্রশস্ত করতে জোর দিয়েছেন ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সরল করার উপর। নির্মূল করতে বলেছেন ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের (গোপন তথ্য কাজে লাগিয়ে বেআইনি ভাবে শেয়ার কেনা-বেচার মাধ্যমে মুনাফা করা) মতো সমস্যাকে। আহ্বান জানিয়েছেন, আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য অভিন্ন কেওয়াইসি ফর্ম চালুর। যাতে বিভিন্ন জায়গায় টাকা রাখতে গিয়ে নিজের সম্পর্কে একই তথ্য বার বার দেওয়ার জন্য সময় নষ্ট না হয়।
অর্থনীতির হাল ফেরাতে ব্যাঙ্কগুলিকেও সুদ কমাতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, এ জন্য দক্ষতা বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার খরচ কমাক তারা। আহ্বান জানিয়েছেন, পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে আরও বেশি ধার দেওয়ার জন্যও।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই সিএসও ঘোষণা করে যে, চলতি অর্থবর্ষে ৫ শতাংশে নামতে পারে বৃদ্ধি। সে জন্য এ দিন ফের সিএসও-কে কার্যত এক হাত নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওই পূর্বাভাস নভেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে করা। তাই তার পর থেকে অর্থনীতিতে উন্নতির যে আশার আলো দেখা গিয়েছে, তা ‘চোখ এড়িয়েছে’ সিএসও-র। ওই আলোয় সওয়ার হয়েই বৃদ্ধিকে ফের ৮ শতাংশের উপর নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তিনি। |