পরিচিতির সুবাদে বাড়িতে ঢুকে এক মহিলাকে জখম করে সোনার গয়না লুঠ করে পালানোর অভিযোগ এক ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি থানার দক্ষিণ বাবুপাড়ার শ্রীমা সরণির একটি বহুতলে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে নার্সিংহোমে ওই বধূ মারা গিয়েছেন না বেঁচে আছেন তা খোঁজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান ওই ব্যবসায়ী। উদ্ধার হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকার লুঠ হওয়া সোনার গয়নাগুলিও। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) ওজি পাল বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই পরিবারের পরিচিত। সেই সুবাদে তিনি মহিলার বাড়িতে ঢুকে লুঠপাঠ চালান। মহিলার মাথায় গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে কয়েকবার আঘাত করা হয়েছে। ধৃত ঋণের জালে ডুবে ওই কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন। তদন্ত চলছে।”
পুলিশ জানিয়েছেন, ধৃতের নাম প্রবীণ কোঠারি। স্টেশন ফিডার রোডে একটি বহুতল আবাসনে তার বাড়ি। মহাবীরস্থান এলাকার তার চিনির ব্যবসা রয়েছে। জখম মহিলা লতা জৈন বর্ধমান রোডের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। লতাদেবীর স্বামী বিশালবাবুর সেবক মোড়ে প্ল্যাস্টিকের জিনিসপত্রের ব্যবসা রয়েছে। গত নভেম্বর মাসেই তাঁদের বিয়ে হয়। শ্রীমা সরণির ওই ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও বিশালবাবুর বাবা-মাও থাকেন। গত সপ্তাহে গোটা পরিবার কিসানগঞ্জে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে যান। এদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শুধু বিশালবাবু এবং লতাদেবী শিলিগুড়ি ফিরে আসেন। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশালবাবু দোকানে চলে যান।
বহুতলটির লতাদেবীদের ফ্ল্যাটের উল্টোদিকে ফ্ল্যাটে একটি ওষুধ কোম্পানির অফিস রয়েছে। এদিন সেটিও বন্ধ ছিল। লতাদেবী পুলিশকে জানান, ১১টা নাগাদ কলিংবেল শুনে তিনি কাঠের দরজা খুলে দেখেন পরিবারের পূর্ব পরিচিত প্রবীণবাবু দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁর বাবা তাঁকে পাঠিয়েছেন বলায় তিনি লোহার গেটটি খুলে দেন। ভিতরে ঢুকে তিনি বসার ঘরে বসে জলও খান। তার পরে তাঁর বাবা ১ লক্ষ টাকা চেয়েছেন বলে জানান। কিন্তু লতাদেবী ঘরের ভিতরে যেতেই পিছন থেকে ধৃত প্রবীণবাবু রিভলবারের মত দেখতে গাড়ির লোহার যন্ত্রাংশ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করতে থাকেন। তার পরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরেন। এতে লতাদেবী জ্ঞান হারান।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, লতাদেবীর পরণের একটি নেকলেস, দুটি বালা, দুটি কানের দুল এবং চারটি আংটি মিলিয়ে প্রায় ৮৫ গ্রাম সোনার গয়না নিয়ে তিনি পালান। মহবীরস্থানে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত সোনার দোকানে বন্ধক রেখে ২০ হাজার টাকা নেন। পরে বাকি টাকা নিয়ে যাবেন বলে জানান। ইতিমধ্যে বাবুপাড়া, লেকটাউন, মহাবীরস্থান এলাকায় ঘটনার খবর চাউর হয় যে মহিলা মারা গিয়েছেন। প্রবীণবাবু তার খোঁজ নিতে নার্সিংহোমে যান। তার আগে জ্ঞান ফিরতেই তার পরিচয়, চেহারার বিবরণ পুলিশকে জানিয়ে দেন লতাদেবী। |